23/01/2021
৫১ টি কৌশল : পত্রউপরস্থ খোঁজযন্ত্র বশীকরণের প্রলম্বায়ন (অন পেইজ এসইও’র এক্সটেন্ডেড ভার্শন)
ভ্রাতা, ভগ্নী, মহোদয় ও নেটতাপসগণ,
অনেকদিন পর, আবার! (সাহস সঞ্চয় করতেও তো কিছুটা সময় লাগে, আরে পঙ্খীরাজ মোটর সাইকেলও নাকি ত্রিশ সেকেন্ড ভটভট করার পর চাকা ঘোরানো ভাল...)
আচ্ছা, সোজা কাজে নামি।
এ লেখার বেশিরভাগ তো বটেই, প্রায় পুরোটাই সবার জানা হলেও এটা কিন্তু মোটেও বিগিনার গাইডমাত্র নয়। বরং দক্ষদের জন্যও এতে মোক্ষম আগ্নেয়াস্ত্র বিলক্ষণ চিপায় চাপায় লুকিয়ে আছে!
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বা খোঁজযন্ত্র বশীকরণের মধ্যে মোটাদাগে আছে দুটা পার্ট:
অনপেইজ, অফপেইজ।
এসইও’র সব আমাদের হাতে নেই, কিন্তু যা আছে, তা কেন যেন আমরা খুব বেশি অবহেলা করি। ভাবটা এমন, ‘ওটা তো আমি চাইলেই করতে পারি, ওটা আবার এসিও হল নাকী!’
হ্যারে ভাই, আপনি চাইলেই যেটা করতে পারেন দেখে না করে ফেলে রেখেছেন, সেটাও গাট্টাগোট্টা তেলচকচকে এসিও। অনেক বড় বিষয়।
আমরা এখানে অনপেইজের বদলে অন-হ্যান্ড নীতিতে যাব। অর্থাৎ যা আমার হাতে আছে ( যা কপালে আছে তা নয় কিন্তু আবার!)।
গুগল এবং বিংকে বশীভূত করার জন্য লিংক বিল্ডিং এবং অফপেইজ বলতে অন্যদের সাইটে বা অন্য ডোমেইনে যা করতে হয়, তা বাদ দিয়ে যাব।
কিন্তু শুধু অনপেইজ নিয়ে কথা বলব না, বরং আমাদের হস্তক্ষেপে যা পড়ে।
যেহেতু অনেক অনেক পয়েন্ট নিয়ে কথাবার্তা, তাই আলাপ হবে চাছাছোলা। সংক্ষিপ্ত। যেখান থেকে শুরু হয় সেখান থেকেই শুরু করি:
১. ডোমেইনের নাম। সবাই জানি, গুগলে এক্সাক্ট ম্যাচের বেইল নেই, কিন্তু আমেরিকানরা এখনো ৩০% এর বেশি ক্ষেত্রে বিং এবং ইয়াহু ব্যবহার করে (আমরা জানি, ইদানিং যাহা বিং তাহাই কার্যক্ষেত্রে হু, ইয়াহু)। বিং কিন্তু এখনো ডোমেইন নামের কাছাকাছি ম্যাচকে প্রাধান্য দেয়। তাই ডোমেইন নামে যদি পারশিয়াল ম্যাচকে পুরোপুরি অবহেলা করেন, তবে বিংয়ে ধরা খেতে হবে। অর্থাৎ ৩০% গ্রাহকের কাছে ধরা খেতে হবে।
২. ডোমেইন নামের জন্য নিশের শব্দটাই যে থাকতে হবে এমন কথা নাই, বরং ওই নিশে কোন্ শব্দগুলোর সার্চ ভলুম বেশ ভাল সে শব্দগুলো পারশিয়াল ম্যাচের জন্য বেশ কাজের।
৩. পেজলোড স্পিড। এখন টারগেট কান্ট্রিতে শেয়ার্ড হোস্টিঙে অ্যাভারেজ পেজলোড স্পিড হল এক সেকেন্ডের ৮৫ ভাগ (৮৫০ মিলি সেকেন্ড বা এমএস )।
কিন্তু ইন্ডাস্ট্রির টপ লেভেল শেয়ার্ডগুলোর স্পিড হল ৩০০-৪০০ এমএস। অথচ এখন আদর্শ স্পিড ২০০ এমএস। চাইলেই কাভুম (KVM) ও ওপেন ভিজ (OpenVZ) ক্লাউড/ভারচুয়াল হোস্টিঙ নেয়া যায় যেগুলোতেও খরচ আহামরি বেশি নয়। বিশেষ করে আমরা যদি বিজনেসকে বিজনেস হিসাবে দেখি। তখন স্পিড হবে মাত্র ৪০ থেকে ১৫০ এমএস।
৪. শর্ট উরাল। উরাল গাছের মত ডাল উপডাল লতা পাতা না করে সরাসরি রুট ডোমেইন থেকে ছোট্ট উরাল করে নিলেই ভাল।
৫. শর্ট উরালটাকে অলটারনেটিভ পেইজ টাইটেল হিসাবে ব্যবহার করা। অর্থাৎ আপনি পেজ টাইটেল দিয়েছেন ‘বেস্ট টোয়েন্টি ভাতের চাল রিভিউ ২০১৮’ আর উরালের নাম দিয়েছেন ’ভাতেরচাল.কম/টপ-চাল-গাইড’।
৬. পেজ টাইটেলকে ৭/৮ ওয়ার্ড এবং ৬০/৭০ ক্যারেক্টারের ভিতরে রাখা। যেন ইঞ্জিন টাইটেল কাটা না দেয়।
৭. কাছাকাছি বিষয়ে আলাদা পেইজ না করে এক পেইজের এক আরটিকেলে সব ভরে দেয়া। কাছাকাছি বিষয়ে আলাদা পেইজ থাকলে ছোট্ট সার্চ ভলুর বেলায় সার্চ ইঞ্জিন খুশি হবে কিন্তু বড় সার্চ ভলুতে দেখা যাবে আমারটার অস্তিত্বই নাই। অথচ এক পেইজের এক আরটিকেলে সব ভরে দিলে সেটা ছোট ছোট ভলুম যেমন কাভার করবে তেমনি বড় ভলুমও কাভার করবে। যে কিওয়ার্ড টারগেট করিনি এমন বেশ কিছু কিওয়ার্ডও কাভার করবে।
৮. এক্কেবারে নিয়মিত সাইট আপডেট করা। এর পার্ট হিসেবে বলা যায়: প্রথম কথা হল নিয়মিত বিরতিতে আরটিকেল দেয়া। দিনে একটা, নয়তো সপ্তাহে দুটা, নয়তো মাসে চারটা না পারলে দুটা... এরচে কম হলে কি আর হয়!
৯. যখনি কোনও আরটিকেল দেবেন, তখনি সেটাকে কীভাবে সাইটের অন্যান্য আরটিকেলে লিংক বা মেনশন দেবেন তা ঠিক করে নেয়া।
১০. পুরনো আরটিকেলে মেনশন দেয়ার সময় কৃপণতা না করা। বিপুল প্রয়োজনীয় এলিমেন্ট। যেমন: পুরনো আরটিকেলে মেনশন দিচ্ছেন, এমন সময়ে সেটার কিছু বাক্য গঠন পরিবর্তন করলেন,
১১. সেটা কোন্ কোন্ কিওয়ার্ড এ রেঙ্ক পেয়েছে, তার মধ্যে কোন্ কোন্ কিওয়ার্ড আপনি আগে টারগেট করেননি কিন্তু পেয়ে বসে আছে, সেই কিওয়র্ডগুলোর জন্য এক দুই বাক্য হলেও অপটিমাইজ করা। ১০-১৫ মিনিট সময়ই লাগবে একজন এক্সপার্টের! ফলাফল? পুরনোটায় নতুন করে ৫০০% পর্যন্ত ট্রাফিক সহজেই।
১২. মেনশন দেয়ার সময় কিছু বানান ঠিক করে নিলেন, কিছু গ্রামার ঠিক করে নিলেন, যাবতীয় জটিল ও কঠিন রোগাক্রান্ত বাক্যকে সরল করে নিলেন, সিনোনিম দিলেন কিছু কিছু,
১৩. প্যারায় প্যারায় আপনার বর্ধিত নিশজ্ঞানের অংশ হিসাবে কিছু কথা বাড়তি দিলেন। আরটিকেলটা পুরনো, তখন আপনার এই নিশে এতটা জ্ঞান ছিল না।
১৪. খুব জরুরী, চলতি আমেরিকান ফ্রেজ কিছু ঢুকিয়ে দিলেন। যেমন, ‘এইটা আপনার ধীরে ধীরে বাড়বে’ না বলে নীল প্যাটেলের মত বললেন, ‘এইটাতে স্নোবল এফেক্ট হবে’। বা ‘আপনার পয়সা কম আসবে’ না বলে বললেন, ‘আপনি টেবিলে পয়সা ফেলে রেখে যাবেন’
১৫. এখনো কিন্তু পুরনো আরটিকেলে মেনশন দেয়ার সময়ে করা কারিশমার কথা বলছি। দেখবেন, আদ্যিকালে আপনি বা আপনার রাইটার তিনতলা বিল্ডিঙের সমান একেকটা প্যারা দিয়েছেন। প্যারা পড়তে গিয়ে পাঠকের প্যারাকে ছোট করার জন্য একটা প্যারাকে ছোট ছোট করলেন। (আমরা আর কবে পাঠক নিয়ে ভাবি? এট লিস্ট, মহামান্য স্পাইডার তো খুশি হবে!)
১৬. দেখবেন, অনেক প্যারাতেই চাইলে টাইটেল দেয়া যেতো, দেয়া হয়নি, দিয়ে দিলেন। ভাল অপটিমাইজেশন হল।
১৭. মেনশন দেয়ার সময় শুধু এক পাতার মেনশন দেয়াই দেখবেন কেন? লক্ষ্য করুন, ইতোমধ্যে আপনার সাইট কতটুকু ইভলভ হয়েছে। আরো কোন পাতার মেনশন দেয়া উচিত কিনা।
১৮. আউটবাউন্ডে কোন ব্রোকেন লিংক আছে নাকি? থাকতেই পারে, ভাইব্রাদারের সাথে লিংক বন্টন করেছেন- সে হয়তো নতুন উরালে নিয়ে গেছে তার আরটিকেলটাকে। তারও তো বিবর্তন চলছে উঠতি মারকেটার হিসাবে। অথবা, করেছিলেন পিবিএন, এখন সেইটাকে বছর পেরিয়ে গেছে আর হোস্টিং নবায়ন করা হয়নি বলে ব্রোকেন লিংক হয়ে বসে আছে। ব্রোকেন লিংকগুলোকে ঠিক করলেন বা নিদেনপক্ষে বাদ দিলেও গুগলের কাছে আসলেই ভাল লাগবে।
১৯. একটা প্রজেক্ট নিয়েই নিলেন। টাইটেলগুলোকে ইমেজ দিয়ে রিপ্লেস করবেন। ইমেজে টাইটেল লেখা থাকবে, সেইসাথে নান্দনিক ছবিও। আর এর ব্যাকগ্রাউন্ডে যে লেখাটা থাকার কথা সেটা সিএসএস দিয়ে দশ হাজার পিক্সেল দূরে ঠেলে দিলেন। ইঞ্জিন দেখবে লেখা সেখানেই আছে, ট্রাফিক দেখবে সেখানে সুন্দর ইমেজ, ইঞ্জিন ইমেজ দেখেও মুগ্ধ হবে।
২০. সিএসএস এর কথা যখন এসেই গেল, টাইপোগ্রাফি আর বাদ যায় কেন। আরটিকেলটাকে গড়পড়তা আরটিকেল না করে সুন্দর করে ট্যাগভিত্তিক করে নিলেন। সকল ইঞ্জিন খুবই খুশি হবে। স্পাইডাররাতো সারফেস ওয়েব থেকে খুশিতে লাফ দিয়ে ডার্ক ওয়েবে চলে যাবে। কাজটা প্রতিটা আরটিকেলে করতে লাগবে ৫ মিনিট। শিখতে লাগবে ১-৩ ঘন্টা। ধরুন আপনার আরটিকেল ৩ হাজার ওয়ার্ড
এর। এই আরটিকেলে মূলত মহাখন্ড আছে তিনটা। উপখন্ড আছে ১২ টা। এখন ৩ টা মহাখন্ডের প্রতিটাকে ... এর ভিতরে নিয়ে এলেন। আর প্রতিটায় যে চারটা করে উপখন্ড আছে এবং টাইটেল ও ইমেজ আছে প্রতিটায়, সেগুলোর একেকটাকে ... এর ভিতরে নিয়ে এলেন। স্পাইডার এই খন্ড বিখন্ডকে আলাদা আলাদা করে দেখতে এবং মূল্যায়ন করতে (বাংলা কথায় রেঙ্ক দিতে) শিখবে।
২১. ইমেজ নিয়ে অবশ্য আমাদের মত অ্যামাজন ওয়ালাদের সমস্যা নেই। প্রচুর ইমেজ। তবু, চেষ্টা করলেন ৩০০ ওয়ার্ড পরপর রিলিভেন্ট ইমেজ দিতে। খুব খাবে। রিডার-স্পাইডার সবাই।
২২. আমরা সাধারণত আরটিকেলে ভিডিও দেই না। কাজ করে কূল পাই না ইউটিউব সামলাবো কখন? বা, নিজের যখন এ আরটিকেলের বিষয়ে ভিডিও তৈরি করা হয়নাই, অন্যর ভিডিওতে লিংক দিয়ে আমার কী লাভ? এখানেই ধরা। অন্যর ভিডিওকেও যদি আপনার আরটিকেলে মেনশন করেন, সেটাও আপনারই লাভ। শুধু লক্ষ্য রাখতে হবে ভিডিওটা যেন সুপার রিলিভেন্ট হয় এবং গুগলের টপে আছে এমন হয়। এতে গুগল অ্যাশিওর্ড হয় যে, আপনি আপনার নিশের অথরিটিগুলোকে চিনতে পারছেন। পাশাপাশি, ভিডিও থাকা মানেই আপনার সাইটের/পেজের মান বেড়ে গেল অনেকখানি।
২৩. আউটবাউন্ড লিংক দেয়ার বেলায়ও আমরা সাঙ্ঘাতিক কৃপণ। অথচ উল্টো হলেই ভাল। উপরের কারণেই। গুগল ধরে নিবে, এই ক্ষেত্রে আপনি অথরিটিগুলোকে চেনেন এবং অথরিটিগুলোর সাথে সম্পর্ক রাখেন। নিশ্চিন্তে BBC, CNN টাইপ চরম অথরিটি সাইটগুলোর অতি জরুরী পেজে লিংক দেন। বিশেষ করে সিস্টার নিশগুলোতে বা মাদার/চাইল্ড নিশে যেসব গ্রাউন্ডব্রেকিং আবিষ্কার হচ্ছে, সেসব বিষয় মেনশন করুন।
২৪. যদি মনে হয় ভিডিও দিলে ট্রাফিক ভাগবে, তাহলে ভিডিও দিন আরটিকেলের শেষের অর্ধেকে। সাপও মরল, লাঠিও ভাঙল না। আবার প্রথাগতভাবে একেবারে শেষে দেবেন না। গুগল চালাক হচ্ছে।
২৫. যদি কোনও আউটবাউন্ড লিংক দেয়ার সময় আপনার মনে হয়, ট্রাফিক এই ভাগল, ভাগতে দেবেন কেন? বিনা দ্বিধায় ‘ওপেন ইন নিউ ট্যাব’ টাইপ লিংক দিন। এখানে ক্যালকুলেটিভ হতে হবে, আপনার সব লিংক এভাবে দিলে সাইট বিরক্তিকর হবে ট্রাফিকের কাছে। তাই যেগুলো আসলেই মহা অথরিটি, মানুষজন চলেই যাবে সেসবে ক্লিক করে, সেগুলো শুধু নিউ ট্যাবে দিন।
২৬. ওপেন ইন নিউ ট্যাব আউটবাউন্ড লিংক দিতে চিন্তিত হবার কিছু নেই। আমি অনেক অথরিটি সাইটকে দেখেছি, খোদ্ অ্যাফিলিয়েট লিংকগুলোকেও এভাবে রাখে। তারা তো ডুবে যাচ্ছে না।
২৭. এভাবে, লিংকিং করার জন্য যখন পুরনো আরটিকেল ধরবেন, তখন এডিট শেষে লক্ষ্য রাখুন যেন ‘লাস্ট এডিটেড অমুক তারিখ’ দেখায়। এটা ভয়ানক হেল্পফুল।
২৮. চাইলে পাবলিশ ডেটও মোস্ট রিসেন্টে চেঞ্জ করে দিতে পারেন। ঠকা খাবার মনে হয় সম্ভাবনা নেই, কারণ বড় মহারথীরাও এহেন অপকর্ম করে বিজয় নিশান ওড়াচ্ছে। অল্প সাবানে অত্যধিক ফেনা।
২৯. বিশেষ করে পাতাটা যখন এখন একটু ঘষামাজাই করবেন, যে পণ্য বা বিষয় নিয়ে করা হয়েছে পাতাটা, সে পণ্য বা বিষয় নিয়ে আমাজনে একটু দেখে আসলেন। অ্যাবোভ দ্য ফোল্ড দু একটা রিসেন্ট অ্যারাইভাল বা রিসেন্ট বেস্ট সেলারকে সেখানে দু-এক বাক্যে বর্ণনা দিয়ে লিস্টেড করলেন। তাতে করে পুরো আরটিকেলটাই নতুন হয়ে যাবে।
৩০. যেটায় টেবল অভ কন্টেন্ট দেয়া নেই, দিয়ে দিলেন। টেবল অভ কন্টেন্ট দেয়ার সময় শিবের গীত পুরোটা না লিখে গীতের টাইটেল লিখে দিলেন। যেমন: একেকটা টাইটেলের নাম ছিল এমন:
দ্য ভেরি বেস্ট ঠান্ডা রসমালাই রিভিউ
দ্য ভেরি বেস্ট গরম রসমালাই রিভিউ
দ্য অরিজিনাল কুমিল্লা মাতৃভান্ডার রসমালাই রিভিউ
এগুলা মূলত লেখা দরকার আছে। কারণ, গুগল চালাক হয়েছে। চালাক হয়নাই মরার বিং। তার জন্য ফ্রেজাল ম্যাচের জন্য দরকার। কিন্তু টেবল অভ কন্টেন্টে এতটা দরকার কী? সেখানে এই তিনটাকে লিংকিং করলেন এভাবে:
ঠান্ডা রসমালাই
গরম রসমালাই
কুমিল্লা মাতৃভান্ডার রসমালাই
যাই হোক, টেবল অভ কন্টেন্ট কিন্তু স্রেফ সূচী নয়। এটা লিংকিং এবং নেভিগেশনের অন্তর্ভুক্ত।
৩১. যেটা গুরুত্বপূর্ণ, সেটার টেবল অভ কন্টেন্ট মূল আরটিকেলের প্রথমদিকে থাক বা না থাক সাইডবারে দিলেন। ওটা হোভার করে থাকবে। ইউজার যেখানেই যাক, সাইডবার শো করবে পুরো পেজের সূচীপত্র। যে সেকশনে সে বর্তমানে আছে সে সেকশনটা হাইলাইটেড হবে। এটা কিন্তু ব্রহ্মাস্ত্র। বাউন্সরেট অনেক অনেক কমে যাবে। ইউজার সুপার নেভিগেশন এক্সপেরিয়েন্স পাবে।
৩২. যদি আসলেই নিজের সাইটে খুব সময় দেন, বা টিমওয়ার্ক করেন, এবং সাইটকে অথরিটি করার ইচ্ছা থাকে, তবে একটা বোমা ব্যবহার করেন না! চ্যাটিঙ অপশন খোলা রাখুন এবং প্রথম মেসেজটা অটোমেটেড করে রাখুন, যেমন, ‘হাই, আমি দেখলাম তুমি মিনিকেট চালের বিষয়ে খোঁজ খবর করছ, আমি তোমাকে মিনিকেটের বিষয়ে হেল্প করতে পারি’ এবং কিছুক্ষণ পর আরেকটা, ‘তোমাকে মিনিকেটের বিষয়ে মাত্র দুয়েকটা প্রশ্ন করেই বেস্ট সাজেস্ট করতে পারি’। উত্তরগুলো অটোমেটেড করে সাজিয়ে রাখা কোন ব্যাপার না। তবে ভাল হয় যে জবাব দিবে সে একটু আধটু সচল হলে।
৩৩. চরম অবহেলা করে এসেছেন লোগোকে? এবার সেটাকে একটু চেঞ্জ করে নিতে পারেন। স্লাইট। কালার অপটিমাইজেশন, শেইপ অপটিমাইজেশন, ফাইলটাকে একটু ভারি করা- যেন ফেটে না যায়।
৩৪. অনেকের সাইটেই ট্যাবের শুরুতে দেখানোর মত কোনও ইমেজ থাকে না। এতে করে ট্রাফিকের কাছে সাইটকে নির্ভরযোগ্য মনে হয় না। বাউন্সরেট বাড়ে। খোদ লোগো অথবা লোগোর একটা পার্টকে সেটার জন্য ব্যবহার করুন ছোট্ট png ফাইলটার এক্সটেনশন হবে .ico
৩৫. নিজের নিশে (তা সরু হোক আর পুরু) এলোমেলোভাবে আরটিকেল দেয়ার চেয়ে যে বিষয়টা বা সাবনিশ নিয়ে আরটিকেল দিচ্ছেন, সে বিষয়ের আগা পাশ তলা সব কাভার করে নিলেন।
৩৬. নিশের যে বিষয়ে ফোকাস করছেন, সেই সাব নিশে একটা স্কাইস্ক্র্যাপার টেকনিক আরটিকেল তো মাস্ট! এমনকি সেটা যদি পিলার মানি কন্টেন্ট নাও হয়।
৩৭. ইমেজ অপটিমাইজেশনে আমরা ধরা খাই। যেমন, লোগের ইমেজ নেম দেই logo, অল্ট বা অল্টারনেটিভ টেক্সটও দেই logo. অথচ প্রতিটা ইমেজের যদি যথাযথ সংক্ষিপ্ত কিন্তু পরিপূর্ণ নাম থাকতো, তাহলে আমাদের অজান্তেই কিছু ট্রাফিক চলে আসতো। বিশেষ করে এটা রেঙ্কে ইফেক্ট ফেলে। roshmalai.com_logo.png নামটা এভাবে বা আরো ডেসক্রিপটিভ কিন্তু রিডেবল হলে আরো ভাল।
৩৮. ইমেজকে ওয়েব অপটিমাইজ করার বেলায়ও দ্বিতীয়বার ধরা খাই। অথচ ফটোশপ বিশারদ হওয়া লাগে না ওয়েবের জন্য সেইভ করতে ও সঠিক মাপে সেইভ করতে।
৩৯. আমরা সাধারণত পেইজকে ভারি করে ফেলি চারকোণা ইমেজ দিয়ে দিয়ে। ব্যানার শেইপের ইমেজও কিন্তু দেয়া যায় এবং সেটার মধ্য প্রচুর প্রয়োজনীয় ইমেজও ব্যবহার করা যায়।
৪০. আমরা ব্র্যান্ড বিল্ডআপ করার চেষ্টা করি না। নিজেদের ইমেজগুলোয় ব্র্যান্ড লোগে ব্যবহার করতে বাঁধা নেইতো। ট্রাফিক দেখতে দেখতে ব্র্যান্ডে অভ্যস্ত হয়ে যাবে।
৪১. কানাঘুষা জোরদার হয়েছে। আগে যেমন ব্যাড নেইবারহুড রেঙ্ককে প্রভাবিত করতো, এখন আসলেই নাকি ডোমেইন রেজিস্ট্রেশনের মেয়াদ প্রভাবিত করে। লং টার্ম বিজনেস তো, কিছুটা বাড়তি পয়সা নাহয় গেলো। ফ্লিপ করার সময় পুষিয়ে নেয়া যাবে।
৪২. আমরা সাধারণত মন্তব্য বন্ধ করে রাখি। ভুল। অন্যরা তাদের সাইটের লিংক সহ মন্তব্য করে গেলে সেটাকে স্প্যাম মনে করি। ভুল। সে তার সাইটের লিংক দিয়ে কীইবা এমন রসগোল্লা কামিয়ে নিচ্ছে বা কীবা আমার ক্ষতি করছে? আমি তো রিভিউ না করে কোনও মন্তব্য পাবলিশ করছি না।
দুটাই আদতে আমাদের হেল্প করবে। ওয়ার্ড কাউন্ট বাড়াবে। আর গুগল তো চায় একটা স্ট্যাটিক নন ইন্টারাক্টিভ পেজের বদলে ডায়নামিক ইন্টারাকটিভ পেজ। যদি মন্তব্যর জবাব দিতে গিয়ে রাইটার হায়ার করতে হবে এই ভয় পান, বড়জোর ‘থ্যাঙ্ক ইউ ফর ইউর সাজেশন’ টাইপ গৎবাঁধা দশটা বাক্য তো সেভ করে রাখতে পারবেন! আর ক্রেডিবিলিটির ইমপ্রেশনটা একবার খেয়াল করুন! যে পাতায় মন্তব্যর চিহ্নে ১০-২০-৩০ লেখা থাকবে, সেটায় ট্রাফিক কতটা কনফিডেন্ট ফিল করবে? এমন বহু সাইট আছে যেখানে মন্তব্যর জবাব দেয়া হয়না, তবু, মন্তব্যটা তো তার শব্দবৈচিত্র এবং গ্রহণযোগ্যতা বাড়াচ্ছে!
৪৩. অকারণ পাতলা কন্টেন্টের পেইজ হয় বড় করুন নয় অন্য পেইজের সাথে মার্জ করুন নয় নিদেনপক্ষে ফেলেই দিন। কিন্তু রাখবেন না। এটা সাইটের অথরিটিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। সাইটের অথরিটি ২৫%+ রেঙ্কিঙ ফ্যাক্টর।
৪৪. আবার ফিরে আসি ভিডিওর কথায়। ২০২০ সালের মধ্যে মানুষজন ৮০% ক্ষেত্রে আরটিকেলের বদলে ভিডিও দেখবে। এবং বেশিরভাগ মানুষই দেখবে মোবাইল ডিভাইসে। সেগুলোর লেংথও সুইট, অন্তত আমাদের জন্য। ৪ মিনিটের নিচে। পুরনো কন্টেন্টের জিস্ট নিয়ে ভিডিও করুন।
৪৫. সাইটের নামে করা ইউটিউব চ্যানেলে স্লাইডশো টাইপ ভিডিও করুন যদি নিতান্তই না হয়।
৪৬. ভিডিওতে লক্ষ্য রাখবেন, লেখাগুলো যেন বড় হয়, মোবাইল ফ্রেন্ডলি।
৪৭. স্লাইডশোও যদি হয়, কন্ঠটা যেন অন্তত দেয়া হয়। এজন্য খুবই সস্তায় ফ্রিল্যান্সার পাবেন। কারণ কাজটা করাবেন বাল্ক এ। তাকে বলবেন, ২ ঘন্টা কন্ঠ দিতে হবে। কিন্তু ২ ঘন্টায় ভিডিও হবে ৩০ টা আরটিকেলের জন্য ৩০ টা ভিডিও। পয়সা তাও বেশি লাগবে না, কারণ তাদের খাটুনি বেশি নয়। এবং কোটি কোটি আমেরিকান নারী পুরুষ পড়ে দেয়ার বিনিময়ে প্রায় ‘ফ্রিতে’ ডলার কামাতে অরাজি নয়। এ কাজ করতে তাদের বড়জোর ৪ ঘন্টা লাগবে, কিন্তু ৪ ঘন্টায় তো একটা আরটিকেলও লেখা যায় না।
৪৮. ভিডিওতেও ব্র্যান্ডিং লক্ষ্য রাখতে হবে। অর্থাৎ লোগো। কল টু অ্যাকশন।
৪৯. ভিডিও’র ফেবু এড মারকেটিং খুবই সফল। কারণ এফেক্টিভ। লেখার চেয়ে শ্রবণযোগ্য শব্দ অনেক গুণ বেশি প্রভাব ফেলে। আর ছবি ফেলে তারচে বেশি। শব্দ ও ছবি যে সবচে বেশি প্রভাব ফেলে, ইয়ে, তার প্রমাণ তো আপনি আমি নিজে! সারাদিন ইউটিউব আর মুভি দেখা- কাজ গেলো গোল্লায়!
৫০. ইউটিউবে আপনি নিশ্চিন্তে প্রচুর অ্যাফিলিয়েট বিক্রি পাচ্ছেন।
৫১. ইউটিউব থেকেও অযাচিত প্রচুর ট্রাফিক পাচ্ছেন সাইটে। অপটিমাইজ ও কল টু অ্যাকশন করাটাই বড় কথা। আর আরটিকেল অপটিমাইজেশনের চেয়ে ভিডিও অপটিমাইজেশন রীতিমত ডালভাত।
শুধু এটুকু আমাদের প্রস্তুতি রাখতে হবে, প্রতিদিন ৫০ লাখের কাছাকাছি আরটিকেল পাবলিশ হয় এবং ভবিষ্যত ভিডিওর।
ওরে! হাত ব্যথা হয়ে যাবে তো ভাই! আরো কিছু কথা ছিল, না বলাই রয়ে গেল। শুভেচ্ছা, অপার সম্ভাবনার পথে।
বাহান্ন নাম্বার পয়েন্ট তাই ছেড়ে দিলাম না, ডালের মজা তলাতে। আপনার নিশের সবচে সস্তা পণ্যটা নিয়েও করে ফেলুন আরটিকেল। যেমন, হাজার ডলার দামের কম্পিউটার আপনার নিশ? ২ ডলার দামের কুলিং লিকুইড বা এক ডলারের মাউসপ্যাড নিয়ে আরটিকেল করতে ভুলবেন না। এইযে অবহেলিত আরটিকেলের অবহেলিত ট্রাফিক আসবে, তাদেরকে আপনি চিরকালের জন্য ইমেইল বাঁধনে বাঁধতে পারেন, পারেন সাইটের নিয়মিত ভিজিটরে পরিণত করতে, পুশ করতে পারেন পিলার আরটিকেল সেখানে, আর সবচে বড় কথা, সুঁই কিনতে গিয়ে খড়ের গাদা কিনে আনা মানুষের স্বভাব। বড় জিনিস কিনতে গেলে মানুষ তখন ফোকাস সরিয়ে ছোট জিনিস কেনে না। কিন্তু ছোট জিনিস কিনতে গেলে আর রক্ষা নাই। সুঁই কোথায় হারিয়ে যাবে খড়ের গাদায়!
কনজিউমারিজম ম্যান! কনজিউমারিজম। 📷📷:p
যেসব স্ট্যাটাস/আরটিকেল গুরুত্ব দেই, পরে পড়তে হবে ভাবি, সেগুলোকে লাল ফিতার দৌরাত্ম্যে ফেলে দিই। অর্থাৎ ফেবুর নতুন অপশনের মাধ্যমে সেভ করে রাখি।
শেয়ার করুন, মন্তব্য করুন, নিতান্তই আলসেমি লাগলে লাইক করুন বা ভুল হলে ‘একে ধরিয়ে দিন’ (ধরিয়ে দেয়ার সময়, পাপকে ঘৃণা করুন, পাপীকে নয়) 📷📷
Credit: Passive Journal University