04/05/2025
কুকুরের স্থূলতা(Obesity) বা :
একটি নীরব স্বাস্থ্যঝুঁকি
আপনি কি জানেন?
৫০% এর বেশি পোষা কুকুর স্থূলতায় ভোগে( obesity)
কারণসমূহ:
অতিরিক্ত খাওয়ানো
ব্যায়ামের অভাব
বেশি ট্রীট দেওয়া
স্বাস্থ্যঝুঁকি:
ডায়াবেটিস(diabetes)
গাঁটের ব্যথা(arthritis)
হৃদরোগ
আয়ু হ্রাস
আপনার কুকুরকে সাহায্য করুন:
নির্ধারিত পরিমাণে খাবার দিন প্রয়োজন ভেটেরিনারি ডাক্তারের সহায়তা নিন। ডায়েট চার্ট অনুসরণ করুন
স্বাস্থ্যকর ট্রীট দিন
নিয়মিত ব্যায়াম করান
কুকুরের দেহের অবস্থার স্কোর (BCS) ব্যাখ্যা – ৫ স্তরের স্কেল
১. অতি কৃশ (Emaciated)
পাঁজর, মেরুদণ্ড ও পেলভিক হাড় বাইরে থেকেই দেখা যায়। চর্বির কোন আস্তরণ নেই এবং পেশির ঘাটতি প্রকট। কুকুরটি খুব দুর্বল ও অসুস্থ দেখায়।
সম্ভাব্য কারণ : অপুষ্টি, রোগ বা অবহেলা।
২. কৃশ (Thin)
পাঁজর ও হাড় সহজেই অনুভব করা যায়, কিছুটা দৃশ্যমান হতে পারে। শরীরে অল্প চর্বি থাকে এবং কোমর ও পেট স্পষ্টভাবে ভাঁজযুক্ত।
সম্ভাব্য কারণ : পরিমিতির চেয়ে কম খাওয়ানো বা উচ্চ বিপাক হারের লক্ষণ।
৩. আদর্শ (Ideal)
পাঁজর স্পর্শ করলে অনুভব করা যায়, কিন্তু বাইরে থেকে দেখা যায় না। কোমর দৃশ্যমান, পেট সামান্য উপরের দিকে টানা এবং সুস্থ ও সুষম শরীর।
কারণ: এটি একটি সুস্থ ও পরিপূর্ণ দেহের অবস্থা; অধিকাংশ কুকুরের লক্ষ্য হওয়া উচিত।
৪. অতিরিক্ত ওজন (Overweight)
পাঁজর অনুভব করতে কিছুটা কষ্ট হয়; চর্বির স্তর রয়েছে। কোমর অস্পষ্ট, পেট কিছুটা ফোলা। লেজের গোড়ায় বা ঘাড়ে চর্বি জমতে পারে।
করণীয় : খাওয়ায় নিয়ন্ত্রণ ও ব্যায়ামের প্রয়োজন।
৫. স্থূল (Obese)
পাঁজর স্পর্শে বোঝা যায় না, পুরু চর্বির স্তর। কোমর বোঝা যায় না, পেট নিচের দিকে ঝুলে থাকে। ঘাড়, পিঠ ও লেজে চর্বি জমা স্পষ্ট।
সম্ভাব্য সমস্যা : স্বাস্থ্যঝুঁকি যেমন ডায়াবেটিস, জয়েন্টের ব্যথা, হৃদরোগ।
BCS কেন গুরুত্বপূর্ণ?
এটি স্থূলতা বা অপুষ্টি নির্ধারণে সহায়ক। খাওয়া ও ব্যায়ামের পরিমাণ ঠিক রাখতে সহায়তা করে কুকুরের জীবনকাল ও মান উন্নয়নে সাহায্য করে।
কুকুরদের মধ্যে স্থূলতা একটি গুরুতর স্বাস্থ্যগত সমস্যা এবং এর ফলে তাদের জীবনের গুণমান এবং আয়ুতে ক্ষতিকারক প্রভাব পড়তে পারে। নিচে স্থূলতার কিছু প্রধান ক্ষতিকারক প্রভাবের বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেওয়া হলো:
১. জয়েন্টের সমস্যা
চলাফেরায় প্রভাব: অতিরিক্ত ওজন কুকুরের শরীরের জয়েন্টগুলিতে বিশেষ করে হিপ, হাঁটু এবং কনুইতে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে। এই অতিরিক্ত চাপ কনড্রাইল বা কারটিলেজের ক্ষয় এবং অস্টিওআর্থ্রাইটিস রোগের কারণ হতে পারে।
ব্যথা এবং খোঁড়ানো : স্থূল কুকুরদের শরীরে প্রায়ই ব্যথা হয় এবং খোঁড়াতে দেখা যায় যা তাদের গতিশীলতা কমিয়ে দেয়। সময়ের সাথে সাথে, এটি তাদের জীবনের গুণমান কমিয়ে দিতে পারে।
২. হৃদরোগ
হৃদয়ের ওপর অতিরিক্ত চাপ: অতিরিক্ত ওজন হৃদয়ের ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে, ফলে হৃদয়কে শরীরের সব অংশে অক্সিজেন পাঠাতে বেশি পরিশ্রম করতে হয়। এই কারণে উচ্চ রক্তচাপ এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
হৃদযন্ত্রের ব্যর্থতা: গুরুতর ক্ষেত্রে, স্থূলতা হৃদরোগের মতো অবস্থার সৃষ্টি করতে পারে, যা হৃদযন্ত্রের ব্যর্থতার দিকে নিয়ে যেতে পারে।
৩. ডায়াবেটিস
ইনসুলিন প্রতিরোধ: মানুষের মতো কুকুরদের মধ্যে স্থূলতা ইনসুলিন প্রতিরোধ সৃষ্টি করতে পারে, যার ফলে শরীরের কোষগুলি ইনসুলিনের প্রতি কম সংবেদনশীল হয়ে ওঠে। এর ফলে রক্তে সুগারের পরিমাণ বাড়তে থাকে এবং এক সময় ডায়াবেটিস মেলিটাস হতে পারে।
৪. শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা
শ্বাসকষ্ট: শরীরের অতিরিক্ত চর্বি বক্ষ এবং পেটের চারপাশে জমে, যা শ্বাসযন্ত্রের বিকাশকে সীমাবদ্ধ করে এবং শ্বাস নিতে অসুবিধা সৃষ্টি করে। এর ফলে কুকুরদের শারীরিক কার্যক্রমে ক্লান্তি এবং ধীরগতির প্রভাব পড়ে।
অ্যানাস্থেশিয়ার জটিলতা: স্থূল কুকুরদের অ্যানাস্থেশিয়া (অবসাদ) সম্পর্কিত জটিলতা বেশি হওয়ার ঝুঁকি থাকে, যা সার্জারি বা সাধারণ প্রক্রিয়ায় উদ্বেগ সৃষ্টি করতে পারে।
৫. আয়ুর সংক্ষিপ্ততা
জীবন বিপদের উচ্চ ঝুঁকি: স্থূলতা বিভিন্ন জীবনঘাতী রোগের ঝুঁকি বাড়ায়, যেমন ক্যান্সার, কিডনি রোগ এবং স্ট্রোক। স্থূল কুকুরদের আয়ু সাধারণত স্বাস্থ্যকর ওজনযুক্ত কুকুরদের তুলনায় কম হয়ে থাকে।
জীবনের গুণমান: শুধু আয়ুই নয়, স্থূলতা কুকুরদের শক্তি, খেলার আগ্রহ এবং সাধারণভাবে জীবনযাপনকে প্রভাবিত করে, যা তাদের জীবনযাত্রার মান কমিয়ে দেয়।
৬. যকৃৎ রোগ
চর্বিযুক্ত যকৃৎ রোগ: স্থূলতা যকৃতে চর্বি জমে যাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ায়, যা যকৃৎকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। এই অবস্থা, যা হেপাটিক লিপিডোসিস বা চর্বিযুক্ত যকৃৎ রোগ নামে পরিচিত, যদি চিকিৎসা না করা হয় তবে যকৃৎ ব্যর্থতার দিকে নিয়ে যেতে পারে।
বিষক্রিয়া নিষ্কাশন সমস্যা: যকৃৎ শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ নিষ্কাশন করতে সাহায্য করে। যখন এটি স্থূলতার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তখন কুকুরের শরীরের বিষাক্ত পদার্থ নিষ্কাশন ক্ষমতা কমে যায়, যা গুরুতর স্বাস্থ্যগত সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।
৭. দুর্বল ইমিউন সিস্টেম
ইমিউন সিস্টেমের দুর্বলতা: স্থূলতা ইমিউন সিস্টেমের কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়, যার ফলে স্থূল কুকুররা সংক্রমণ এবং রোগের প্রতি বেশি সংবেদনশীল হয়ে ওঠে এবং পুনরুদ্ধারে সময় নেয়।
দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ: চর্বি কোষ প্রদাহজনক মার্কার তৈরি করে, এবং অতিরিক্ত চর্বি শরীরের মধ্যে প্রদাহের পরিমাণ বাড়ায়, যা ইমিউন সিস্টেমকে আরও দুর্বল করে এবং বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
৮. ক্যান্সারের উচ্চ ঝুঁকি
ক্যান্সারের ঝুঁকি: স্থূলতার কারণে বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার যেমন স্তন ক্যান্সার, মূত্রাশয়ের ক্যান্সারের ঝুঁকি বেড়ে যায়। অতিরিক্ত চর্বি ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করতে পারে।
৯. আচরণগত সমস্যা
শারীরিক কার্যক্রমের প্রতি আগ্রহ কমে যাওয়া: স্থূল কুকুররা প্রায়ই শারীরিক কার্যক্রমে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। এর ফলে তারা আরও নিস্তেজ এবং মানসিকভাবে উদ্বিগ্ন হতে পারে।
প্রশিক্ষণে সমস্যা: স্থূল কুকুরদের জন্য প্রশিক্ষণ কার্যক্রম বা খেলাধুলা কঠিন হয়ে পড়ে, যা তাদের মানসিক এবং আবেগগত স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে।
কুকুরদের স্থূলতা প্রতিরোধ এবং ব্যবস্থাপনা করার জন্য খাদ্য নিয়ন্ত্রণ, নিয়মিত শারীরিক কার্যক্রম এবং পর্যবেক্ষণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নিচে কুকুরদের স্থূলতা প্রতিরোধ এবং ব্যবস্থাপনার জন্য বিস্তারিত পদ্ধতি দেওয়া হল:
কুকুরদের স্থূলতা প্রতিরোধ
1. সুষম খাদ্য
উচ্চ-গুণমানের খাবার: কুকুরের বয়স, আকার এবং প্রজাতির প্রয়োজন অনুযায়ী একটি সুষম এবং পুষ্টিকর খাবার নির্বাচন করুন। মানব খাদ্য বা ক্যালোরি, চর্বি বা চিনি সমৃদ্ধ ট্রিট খাওয়ানো এড়িয়ে চলুন।
পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ: কুকুরের খাবার পরিমাণ সঠিকভাবে মাপুন যা খাদ্য প্যাকেটে নির্দেশিত বা ভেটের পরামর্শ অনুযায়ী। খাবার সারাদিন বাইরে রেখে দেওয়ার অভ্যাস এড়িয়ে চলুন, কারণ এটি অতিরিক্ত খাওয়ার কারণ হতে পারে।
কম ক্যালোরি ট্রিট: কম ক্যালোরি ট্রিট ব্যবহার করুন এবং এগুলি পরিমিত পরিমাণে দিন। স্বাস্থ্যকর অপশন যেমন গাজর, শসা বা অন্যান্য কম ক্যালোরি সবজি ব্যবহার করতে পারেন।
2. নিয়মিত শারীরিক কার্যক্রম
প্রতিদিনের হাঁটা: কুকুরকে নিয়মিত শারীরিক কার্যক্রমে যুক্ত করুন, যেমন প্রতিদিনের হাঁটা। প্রাপ্তবয়স্ক কুকুরদের জন্য প্রতি দিন ৩০ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টা মাঝারি পরিসরের কার্যক্রম করা উচিত, যা কুকুরের আকার এবং প্রজাতি অনুযায়ী সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে পারে।
খেলা: ইন্টারঅ্যাকটিভ খেলা যেমন ফেচ, টাগ-অফ-ওয়ার, বা সাঁতার কুকুরকে সক্রিয় রাখবে এবং শারীরিক কার্যক্রমের সুযোগ সৃষ্টি করবে।
প্রজাতি অনুযায়ী কার্যক্রম: কিছু প্রজাতির কুকুরের বেশি শারীরিক কার্যক্রমের প্রয়োজন হয়। কুকুরের প্রজাতি, বয়স এবং স্বাস্থ্য অনুযায়ী কার্যক্রমের মাত্রা সমন্বয় করুন।
3. অতিরিক্ত খাওয়ার অভ্যাস পরিহার করুন
মানব খাদ্য এড়িয়ে চলুন: কুকুরকে মানব খাদ্য খাওয়াবেন না, কারণ এটি সাধারণত কুকুরের জন্য ক্ষতিকর এবং ক্যালোরি বেশি হতে পারে। শুধুমাত্র বিশেষভাবে কুকুরের জন্য তৈরি খাবারই দিন।
খাওয়ার সময়সূচী: একটি নির্দিষ্ট সময়সূচীতে খাবার দিন, সারাদিন খাবার বাইরে না রেখে। এতে কুকুরের ক্যালোরি গ্রহণ নিয়ন্ত্রণে থাকবে এবং অতিরিক্ত খাওয়া কমবে।
4.ডাক্তার দ্বারা নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা
ওজন পর্যবেক্ষণ: নিয়মিত ভেট চেক-আপ কুকুরের ওজন পর্যবেক্ষণ করতে সাহায্য করবে। ডাক্তার আপনার কুকুরের শারীরিক উন্নতি বা অবনতি পর্যবেক্ষণ করতে এবং প্রয়োজনীয় পরিবর্তন প্রস্তাব করতে সহায়ক হতে পারেন।
স্বাস্থ্য পরীক্ষা: রুটিন স্বাস্থ্য পরীক্ষা স্থূলতার কারণে সৃষ্ট রোগ যেমন ডায়াবেটিস, হৃদরোগ বা জয়েন্ট সমস্যা চিহ্নিত করতে সহায়ক।
5. বন্ধ্যাত্বকরণ
বন্ধ্যাত্বকরণের পর কুকুরের হরমোনাল পরিবর্তনের কারণে মেটাবলিজমে পরিবর্তন আসে, যার ফলে ওজন বাড়তে পারে। তাই যদি কুকুরটির বন্ধ্যাত্বকরণ হয়ে থাকে, তবে তার খাদ্য এবং শারীরিক কার্যক্রমের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সচেতন থাকুন।
কুকুরের স্থূলতা ব্যবস্থাপনা
1. ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া
ব্যক্তিগত খাদ্য পরিকল্পনা: যদি কুকুর স্থূল হয়ে থাকে, তবে ভেটের পরামর্শ নিয়ে সুনির্দিষ্ট, ক্যালোরি-নিয়ন্ত্রিত খাদ্য পরিকল্পনা তৈরি করুন। ভেট প্রেসক্রিপশন ওজন-কমানোর খাবার বা পরিমাণ নিয়ন্ত্রণের জন্য পরামর্শ দিতে পারেন।
স্বাস্থ্য মূল্যায়ন: ভেট কুকুরের সামগ্রিক স্বাস্থ্য মূল্যায়ন করবেন, যাতে স্থূলতার পেছনে কোনো অন্তর্নিহিত স্বাস্থ্য সমস্যা যেমন হাইপোথাইরয়ডিজম বা কুশিং রোগ থাকে কিনা তা পরীক্ষা করা যায়।
2. ধীর গতিতে ওজন কমানো
ধীরে ধীরে ওজন কমানো: আকস্মিকভাবে ওজন কমানো ক্ষতিকর হতে পারে, তাই কুকুরের শরীরের প্রতি সপ্তাহে ১-২% ওজন কমানোর লক্ষ্য রাখুন।
খাবারের পরিমাণ কমানো: খাবারের পরিমাণ ধীরে ধীরে কমান যাতে কুকুরের ক্ষুধা না বেড়ে যায়। ছোট অংশে খাবার দিন, কিন্তু খাবার দেওয়ার সময়ের সংখ্যা বাড়ান যাতে কুকুর অতিরিক্ত ক্ষুধায় না থাকে।
3. শারীরিক কার্যক্রম বৃদ্ধি করা
নিয়মিত শারীরিক কার্যক্রম: কুকুরের দৈনিক শারীরিক কার্যক্রমের পরিমাণ বাড়ান। বিশেষ করে যদি কুকুরের জয়েন্ট সমস্যা থাকে, তাহলে কম প্রভাবযুক্ত শারীরিক কার্যক্রম দিয়ে শুরু করুন। ধীরে ধীরে তাদের শারীরিক কার্যক্রমের মাত্রা ও সময় বৃদ্ধি করুন।
বৈচিত্র্য: বিভিন্ন ধরনের শারীরিক কার্যক্রমে কুকুরকে উৎসাহী করুন, যেমন অ্যাজিলিটি ট্রেনিং, সাঁতার বা আপনার সঙ্গে দৌড়ানো।
4. ওজন নিয়মিত পর্যবেক্ষণ
সপ্তাহে একবার ওজন মাপা: কুকুরের ওজন সপ্তাহে এক বা দুইবার মাপুন। এটি কুকুরের ওজন কমানোর অগ্রগতি বুঝতে সাহায্য করবে।
বডি কন্ডিশন স্কোরিং: বডি কন্ডিশন স্কোরিং সিস্টেম (১-৯ স্কেল) ব্যবহার করে কুকুরের স্বাস্থ্যকর ওজন পর্যালোচনা করুন। সাধারণত ৪-৫ স্কোর আদর্শ।
5. জলপানের পরিমাণ বৃদ্ধি করা
হাইড্রেশন: কুকুরকে পর্যাপ্ত পরিমাণে জলপান করান, কারণ সঠিক পরিমাণ জল কুকুরের ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করতে এবং তাদের মেটাবলিজম উন্নত করতে সহায়ক।
6. আচরণগত পরিবর্তন
ইতিবাচক প্রশংসা: কুকুরকে স্বাস্থ্যকর খাদ্য খাওয়া এবং সক্রিয় থাকা জন্য প্রশংসা করুন বা খেলাধুলায় অংশগ্রহণ করান, ট্রিটের পরিবর্তে। এটি স্বাস্থ্যকর অভ্যাস তৈরি করতে সাহায্য করবে।
বেগিং এড়িয়ে চলুন: কুকুরের বেগিং আচরণে ( চেয়ে খাওয়া/ খাওয়ার জন্য পিছনে ঘুরতে থাকে ) সাড়া দেবেন না, কারণ এটি অস্বাস্থ্যকর খাওয়ার অভ্যাসে পরিণত হতে পারে। খাবারের সময়সূচী বজায় রাখতে দৃঢ় থাকুন।
স্থূল কুকুরের জন্য বিশেষ খাদ্য পরামর্শ
1. কম ক্যালোরি, উচ্চ ফাইবার খাদ্য
ফাইবারে সমৃদ্ধ খাবার কুকুরকে দীর্ঘ সময় পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে, যা অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা কমাতে পারে। কম ক্যালোরি খাবার, মডারেট প্রোটিন কুকুরের চর্বি কমাতে সাহায্য করবে এবং পেশী বজায় রাখবে।
2. ওজন ব্যবস্থাপনা খাদ্য ( Obesity control diet )
বিশেষভাবে তৈরি "ওজন ব্যবস্থাপনা" কুকুরের খাবার ব্যবহার করা যেতে পারে, যাতে কম ক্যালোরি এবং চর্বি থাকে, তবে প্রয়োজনীয় পুষ্টি থাকে।
3. ঘরে তৈরি খাবার
যদি ঘরে তৈরি খাবার দেওয়া হয়, তবে ভেট বা পেট পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিয়ে একটি সুষম, কম ক্যালোরি এবং পুষ্টিকর খাবার তৈরি করুন।
উপসংহার
কুকুরদের স্থূলতা প্রতিরোধ এবং সঠিকভাবে ব্যবস্থাপনা করার মাধ্যমে তাদের স্বাস্থ্য রক্ষা করা সম্ভব। একটি সুষম খাদ্য, নিয়মিত শারীরিক কার্যক্রম, এবং নিয়মিত ভেট পরামর্শ গ্রহণের মাধ্যমে কুকুরের স্থূলতা থেকে মুক্তি পাওয়া যায় এবং তা থেকে সৃষ্ট স্বাস্থ্য সমস্যা এড়ানো যায়।
আপনার পোষ্যের জন্য আজই সচেতন হোন!
পুরোটা পড়ে শেয়ার করতে ভুলবেন না, শিখুন শেখান এবং সতর্ক থাকুন।