01/02/2025
ধনী জেলার খেতাব পেয়েছে নোয়াখালী!
বাংলাদেশে এখন সবচেয়ে বেশি দরিদ্র্য মানুষের বসবাস এখন বরিশাল বিভাগে ২৬ দশমিক ৬ শতাংশ। আর চট্টগ্রাম বিভাগে সবচেয়ে কম দারিদ্র্যতার হার, ১৫ দশমিক ২ শতাংশ। এসবের মাঝেই দেশের সবচেয়ে বেশী ধনী জেলার খেতাব পেয়েছে নোয়াখালী! বলা হচ্ছে, জেলাটিতে দারিদ্র্যতার হার চলতি বছরেই অনেক নিচে নেমে এসেছে।
স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন জানায়, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো, বিবিএস-এর হিসাব অনুযায়ী, দেশের ১৯ দশমিক ২ শতাংশ মানুষই দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছে। শহরে দারিদ্র্যের হার সাড়ে ১৬ শতাংশ হলেও, গ্রামে যেটি ২০ ভাগেরও বেশি। সবচেয়ে বেশি ২৬ দশমিক ৬ শতাংশ দরিদ্র মানুষের বসবাস বরিশাল বিভাগে। অন্যদিকে সবচেয়ে কম গরিব মানুষ চট্টগ্রাম বিভাগে ১৫ দশমিক ২ শতাংশ।
বৃহস্পতিবার, ৩০শে জানুয়ারি নগরীর বিআইসিসি সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশের দারিদ্র্য মানচিত্র ২০২২ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মোহাম্মদ মাহবুব হোসেন। বিবিএস পোভার্টি অ্যান্ড লাইভলিহুড স্ট্যাটিসটিকস সেল এই রিপোর্ট তৈরি করে এবং একই দিনে প্রকাশ করে।
বিশ্বব্যাংক, বিশ্ব খাদ্য সংস্থা ও বিএসসের যৌথ গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে। বরিশালের গ্রামে ২৮ দশমিক ১ ও শহরে ২১ দশমিক ৭ শতাংশ দরিদ্র মানুষের বসবাস।
বরিশালের পরেই বেশি দরিদ্র মানুষ ময়মনসিংহ বিভাগে; ২৪ দশমিক ২ শতাংশ। ঢাকায় দারিদ্র্যের হার ১৯ দশমিক ৬ শতাংশ হলেও, এই সময়ে রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগে দারিদ্র্যের হার কমেছে। সবচেয়ে বেশি ৬৩ দশমিক ২ শতাংশ দরিদ্র মানুষের বাস মাদারীপুরের ডাসার উপজেলায়।
এছাড়া সিলেটে দারিদ্র্যের হার ১৭ দশমিক ৩ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৮ দশমিক ৫ শতাংশ হয়েছে।
অন্যদিকে চট্টগ্রামের শহরে ১৭ দশমিক ৮ এবং গ্রামে ৯ দশমিক ৯ শতাংশ দরিদ্র মানুষ বাস করে। এর আগে দারিদ্র্যের হার ছিল ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর বিবিএস-এর খানা আয় ও ব্যয় জরিপের ২০২২ প্রাথমিক হিসেবে এ তথ্য উঠে এসেছিল।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বরিশালের পরেই বেশি দরিদ্র্য মানুষ ময়মনসিংহ বিভাগে ২৪ দশমিক ২ শতাংশ। ঢাকায় দারিদ্র্যের হার ১ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়ে ১৯ দশমিক ৬ শতাংশ হলেও, এই সময়ে কমেছে রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগে দারিদ্র্যের হার।
পাশাপাশি জেলা হিসেবে সবচেয়ে বেশি দরিদ্র্য মাদারীপুর জেলা। এ জেলায় দারিদ্র্যতার হার ৫৪ দশমিক ৪ শতাংশ। আর উপজেলা হিসেবে ৬৩ দশমিক ২ শতাংশ দারিদ্র্যতা নিয়ে শীর্ষে রয়েছে মাদারীপুরের ডাসার। দেশের সবচেয়ে ধনী থানা ঢাকার পল্টন। এ এলাকায় দরিদ্র্য ১ শতাংশ।
এদিকে দেশে সবচেয়ে বেশি ধনী মানুষের বসবাস এখন নোয়াখালী জেলায়। যেখানে দারিদ্র্যের হার ৬ দশমিক ১ শতাংশ।আর সবচেয়ে ধনী ঢাকার পল্টন থানা। প্রতিবেদনে দেখা গেছে, দেশের গ্রাম এলাকায় দারিদ্র্যের হার কমেছে, কিন্তু শহরে বেড়েছে।
২০২২ সালের খানা আয়-ব্যয় জরিপে গ্রাম এলাকার দারিদ্র্যের হার ছিল ২০ দশমিক ৫ শতাংশ; দারিদ্র্য মানচিত্রে তা কমে দাঁড়িয়েছে ২০ দশমিক ৩ শতাংশ। খানা জরিপে শহর এলাকায় দরিদ্র্য ছিল ১৪ দশমিক ৭ শতাংশ; দারিদ্র্য মানচিত্রে তা বেড়ে হয়েছে ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ।
বিবিএসের প্রতিবেদনে দেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলো উঠে এসেছে। রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের ধনী ও দরিদ্র এলাকাগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক যে বিস্তর বৈষম্য, তা স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে প্রতিবেদনে।
প্রষঙ্গত, দেশের ১৯ দশমিক ২ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো, বিবিএস। এর মধ্যে শহরে দারিদ্র্যের হার সাড়ে ১৬ শতাংশ হলেও গ্রামে সেই হার ২০ শতাংশের বেশি বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।