13/04/2021
টাল বা পক্ষাঘাতের সাথে সকল কবুতর পালকই পরিচিত৷ অনেকে মনে করেন পর্যাপ্ত খাবার (সীডমিক্স) দিলে কবুতরের ভিটামিনের অভাব হয় না৷ এ কথা একদম ভুল৷ টাল বা পক্ষাঘাতের মূল কারনই হল ভিটামিনের অভাব৷ প্রয়োজনীয় ভিটামিনের অভাবের কারনে স্নায়বিক দূর্বলতার কারনে পক্ষাঘাত হয়৷ কোন শিকারি প্রাণী দ্বারা আক্রান্ত হলেও স্নায়বিক দূর্বলতার কারনেও পক্ষাঘাত হতে পারে৷ ডিপথেরিয়া, সালমোনেলা, pmv এর কারনে যে পক্ষাঘাত দেখা দেয়, তা রোগের লক্ষণ৷ আর এখানে যে পক্ষাঘাত নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, তা নিজেই একটি রোগ৷ তাই রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে৷ ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের কারনের পক্ষাঘাতের সাথে যেন ভিটামিনের অভাবের পক্ষাঘাত এক করে না ফেলি৷ ভিটামিনের অভাবে পক্ষাঘাতের মৃত্যুহার কম হলেও ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাসে আক্রান্ত পক্ষাঘাতে মৃত্যুহার বেশি৷ বিশেষ করে কম বয়সী কবুতরের৷ ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের কারনের পক্ষাঘাত হলে আগে ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাসের চিকিৎসা করতে হবে, এর পর পক্ষাঘাতের চিকিৎসা করতে হবে।
◆ লক্ষণ
• ঘাড় বাকা হয়ে যায় বা পিছনের দিকে হেলে পড়া।
• সোজা হয়ে দাঁড়াতে বা উড়তে পারে না।
• খাবারে ঠিক মত ঠোকর দিতে পারে না।
• দিক বা লক্ষ ঠিক থাকে না।
• গোল গোল ঘুড়তে থাকে।
• মাথা ঝুলে যায়।
• খেতে না পেরে দুর্বল হয়ে যায়।
• ঝিমাতে পারে।
• শ্বাস প্রশ্বাসে সম্যসা৷
• ডানা/পাখা বা পায়ে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হলে ডানা/পা ঠিকমত নড়াচড়া করাতে পারে না৷
• পাখা ঝুলে থাকে৷
• পায়ের নখগুলো গুটিয়ে যায় বা বাঁকা হয়ে যায়৷
◆ চিকিৎসা
• কোন রোগের লক্ষণ হিসেবে পক্ষাঘাত বা টাল হলে প্রথমে সেই রোগের চিকিৎসা করতে হবে ৷
• মানুষের নিউরো বি ইঞ্জেকশন ১ মিলির ৩ ভাগের ১ ভাগ ১৫ দিন ৷ সকালে খাবারের আগে ৷ ৭-১৫ দিনের আগেও কবুতর সুস্থ হতে পারে, সুস্থ হলে আর ইঞ্জেকশন দিতে হবে না ৷ মনে রাখবেন, ১৫ দিনের বেশি ইঞ্জেকশন দেয়া যাবে না ৷
• ইঞ্জেকশন বুকের নরম জায়গায় দিতে হবে ৷ অভিজ্ঞতা না থাকলে অভিজ্ঞ কারও কাছ থেকে শিখে নিন ৷
• ইনসুলিনের সিরিঞ্জ ব্যবহার করতে হবে ৷
• ইঞ্জেকশন চলাকালীন অন্য কোন ভিটামিন দিতে হবে না ৷
• ১৫ দিন ইঞ্জেকশন দেবার পরও পুরো সুস্থ না হলে Neurobion forte ১ টা করে ট্যাবলেট দিনে ১ বার খাওয়াতে হবে৷
• প্রতিদিন ২/৩ ঘন্টা রোদে রাখুন ৷ বেশি রোদ থাকলে এক কোণে ছায়ার ব্যবস্থা রাখুন ৷ অথবা, হেয়ার ড্রাইয়ার ব্যবহার করুন, দিনে ২/৩ বার ৷
• খাবার না খেলে হাতে ধরে চালের স্যালাইন খাওয়ান ৷
• পক্ষাঘাতগ্রস্ত অংশে হালকা ম্যাসাজ করুন ৷
• সুস্থ হবার পর কবুতরকে গোসল করিয়ে দিতে হবে ৷
◆ বাচ্চার শারিরিক ভারসাম্যহীনতা
ভিটামিন ও খনিজের অভাব জনিত কারনে বাচ্চা কবুতরের মারাত্বক একটি সম্যসা ৷ caltate ১/২ টা করে ট্যাবলেট দিনে ২ বার ৷
◆ প্রতিরোধ
সকল ধরনের পক্ষাঘাত প্রতিরোধে প্রতি মাসে ভিটামিন একটি টানা ৩ দিন,ভিটামিন বি কমপ্লেক্স আলাদাভাবে ২ দিন, belledona ১ দিন খাওয়ান এবং নিয়মিত সাল্মনিল্লা কোর্স করান ৷
বি:দ্র: ভূল ক্রুটি হলে ক্ষমাশীল দৃষ্টিতে দেখবেন ।