Kiwi Trade international

08/10/2021

📌ময়ূর
ময়ূর ও ময়ূরী Phasianidae পরিবারের একটি পাখি। ১৭৫৮ সালে প্রখ্যাত সুয়েডীয় উদ্ভিদবিজ্ঞানী, চিকিৎসক ও প্রাণীবিজ্ঞানী কার্ল লিনিয়াস ময়ুরের গণ Pavo এর নামকরণ করেন। কার্ল লিনিয়াস আধুনিক দ্বিপদী নামকরণ বা বৈজ্ঞানিক নামকরণের ভিত্তি স্থাপন করেন এবং তাকে আধুনিক শ্রেণীবিন্যাসবিদ্যার জনক বলা হয়। ময়ূরের মোট ২ টি গণ Pavo ও Afropavo এর অন্তর্ভুক্ত মোট ৩ টি প্রজাতি রয়েছে। কম বেশি আমরা সবাই ই ময়ূরের সঙ্গে পরিচিত। লম্বা পা, মাথায় ঝুঁটিওয়ালা এই পাখির শরীরের পালকে রয়েছে সবুজ নীল রঙের মিশ্রণ। প্রজাতিভেদে পুরুষ ময়ূরের শরীরের রং ও পালকের রং ভিন্ন হয়ে থাকে। নারী ময়ূরগুলো পুরুষ ময়ূর এর থেকে দেখতে ভিন্ন হয় ও আকারে ছোট হয়। প্রজাতিভেদে গড়ে প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ ময়ূর ৪-৬ কেজি ও প্রাপ্তবয়স্ক ময়ূরীর ওজন ২.৭৫-৪ কেজি হয়ে থাকে। পুরুষ ময়ূরকে পিকক(Peacock) বা ময়ূর, নারী ময়ূরকে পিহেন্(Peahen) বা ময়ূরী ও ময়ূরের বাচ্চাকে পিচিকস্ (Peachicks) বলে ডাকা হয়। বাংলা ব্যাকারণে ময়ূরের ডাক কে এক কথায় কেকা বলে, যদিও বা ময়ূর কেকা এভাবে ডাকে না।

ইন্ডিয়ান ময়ূরঃ
ইন্ডিয়ান ময়ূর(Indian peafowl) বা নীল ময়ূর উজ্জ্বল রঙ্গিন ও বৃহৎ আকারের একটি পাখি। ১৭৫৮ সালে কার্ল লিনিয়াস ইন্ডিয়ান ময়ূরের বৈজ্ঞানিক নামকরণ করেন Pavo cristatus । ময়ূরের এই প্রজাতিটি দক্ষিন এশিয়ার স্থানীয় পাখি, দক্ষিন এশিয়া ছাড়াও পৃথিবীর অন্যান্য অংশেও এই প্রজাতিটি পরিচিত। সম্পূর্ণ ভারত ও শ্রীলঙ্কায় এই প্রজাতিটির বিচরণ। প্রাপ্তবয়স্ক ইন্ডিয়ান পুরুষ ময়ূরের মাথা থেকে লেজ পর্যন্ত মোট ৬.৪-৭.৪ ফুট পর্যন্ত ও ওজন ৪-৬ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। অন্যদিকে প্রাপ্তবয়স্ক নারী ময়ূর ৩৭ ইঞ্চি আকারের ও ২.৭৫-৪ কেজি ওজনের হয়ে থাকে। ইন্ডিয়ান বা ভারতীয় ময়ূর Phasianidae পরিবারের আকার ও ওজনের দিক থেকে সব থেকে বড় প্রজাতি। ইন্ডিয়ান ময়ূর এর পুরুষ ময়ূর নারী ময়ূরীর থেকে আকারে ও ওজনে অধিক এবং নারী-পুরুষ দেখতে অভিন্ন হয়ে থাকে। যেখানে নারী ময়ূরীর শরীরের রং বাদামীর সাথে ফ্যাকাসে কর্বুর ও পেখম পুরুষ ময়ূরের তুলনায় খুব ই ছোট। ইন্ডিয়ান ময়ূরের নারী-পুরুষ উভয় ময়ূরের মাথায় হাত পাখার আকৃতির ফুলের বৃন্তের মতো লিপ্তপদাঙ্গুলি ঝুঁটি থাকে এবং ঝুঁটির প্রান্ত কিছুটা বৃত্তাকার হয়। পুরুষ ময়ূরের ঝুঁটির বৃত্তাকার প্রান্ত নীল-সবুজের মিশ্রণের ও নারী ময়ূরের ঝুঁটির বৃত্তাকার প্রান্ত শরীরের রঙের মতো বাদামী হয়ে থাকে। ইন্ডিয়ান ময়ূর গুলো উচ্চস্বরে পি-আউ বা মি-এয়ু ও কক-কক এ জাতীয় শব্দ করে। প্রজনন মৌসুমের আগে এ জাতীয় শব্দ করা বৃদ্ধি করতে থাকে ও পেখম মেলে প্রজনন মৌসুমের সূচনা করে। ইন্ডিয়ান ময়ূরের কোনো উপপ্রজাতি নেই তবে আবদ্ধভাবে নির্বাচনী প্রজননের মাধমে ইন্ডিয়ান ময়ূরের অনেক কালার মিউটেশন সৃষ্টি করা সম্ভব হয়েছে। যার ফলে ইন্ডিয়ান ময়ূর বিশ্ব জুড়ে সব থেকে বেশি পোষা হয় এবং আমদানি হয়। ইন্ডিয়ান ময়ূর ভারতের জাতীয় পাখি।

সবুজ ময়ূরঃ
সবুজ ময়ূর দক্ষিন এশিয়ার চিরসবুজ বনের বৃহৎ আকৃতির একটি পাখি। ১৭৬৬ সালে কার্ল লিনিয়াস সবুজ ময়ূরের বৈজ্ঞানিক নামকরণ করেন Pavo muticus। সবুজ ময়ূর দেখতে অনেকটা নীল ময়ূরের মতই, তবে শরীরে ঝলমলে ধাতব সবুজ পালকের আধিক্য রয়েছে। এরা বেশ বড় আকারের ভূচর পাখি, প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ ময়ূরের মাথা থেকে লেজের শেষ পর্যন্ত মোট আকৃতি ৫.১১-৯.১০ ফুট পর্যন্ত হয়ে থাকে এবং ৪.৫ কেজি ওজনের হয়ে থাকে। পুরুষ ময়ূরের পিঠ ও ঘাড় সবুজ; ঘাড়, গলা ও বুকের পালক আঁশের মত উঁচু। পালকহীন মুখের চামড়া নীল ও হলুদে মেশানো। ডানা-কভার্ট বা ঢাকনি সবুজ রঙের। ডানার মধ্যভাগ ও গোড়ার পালক বাদামি এবং লেজের পেখমের প্রান্তে কালো চক্রের মধ্যে বেগুনী ফোঁটা দেখা যায়। দেহতলে সরু কালো ধাতব তামাটে-সবুজ ও বেগুনী দাগ থাকে। প্রাপ্তবয়স্ক সবুজ ময়ূরী ৩.৩-৩.৭ ফুট আকারের হয়ে থাকে। পুরুষ ময়ূরের চেহারা ও আকার স্ত্রী পাখির থেকে কিছুটা আলাদা হলেও ময়ূরীর চেহারা সামনে থেকে দেখতে পুরুষ ময়ূরের মতই, তবে দেহের কিছু কিছু অংশ ফ্যাকাসে হয়ে থাকে। সবুজ ময়ূরীর পিঠ গাঢ় বাদামি বর্ণের ও লেজ পেখমহীন। ডানা-ঢাকনি বা কভার্ট, পিঠের শেষভাগ ও রাম্প বা কোমর কালচে বাদামি বর্ণের হয়ে থাকে। লেজে পীতাভ বাদামি ও কালো রঙের ডোরা আছে। স্ত্রী ও পুরুষ উভয় ময়ূরের বল্লমের মতো দেখতে সুঁচালো ও বিপরীতমুখী ঝুঁটি, চোখ কালো, লম্বা পা ও ঠোঁট ধূসর হয়ে থাকে। অপ্রাপ্তবয়স্ক ময়ূর পাখি দেখতে ময়ূরীর মতো তবে কোমরে সবুজাভ ও তামাটে বর্ণ থাকে না। এক সময় সমগ্র দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং উত্তর-পূর্ব ভারত ও বাংলাদেশ জুড়ে সবুজ ময়ূরের অবাধ বিস্তার ছিল। বর্তমানে জীবিত ময়ূরের বড় অংশ কম্বোডিয়া, মিয়ানমার ও ভিয়েতনামের পশ্চিমাংশে বসবাস করে। বাকি সবুজ ময়ূরের বসবাস উত্তর ও পশ্চিম থাইল্যান্ড, দক্ষিণ লাওস, চীনের হাইনান প্রদেশ ও ইন্দোনেশিয়ার জাভায়। ভারতের মনিপুর প্রদেশে কদাচিৎ এদের দেখা মেলে। একসময় মিজোরামে এদের স্থায়ী আবাস হলেও এখন আর সেখানে এদের দেখা যায় না। সর্বশেষ ২০০৭ সালে মিজোরামের দক্ষিণে একটি সবুজ ময়ূর দেখা গিয়েছিল। বাংলাদেশে ১৯৪০ এর দশকেও সবুজ ময়ূর চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা ছিল। এখনও বান্দরবানের গহীন বনে সবুজ ময়ূর থাকতে পারে। মালয়েশিয়া থেকে বহু আগেই সবুজ ময়ূর বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে। সবজ ময়ূর সাধারণত ছোট দলে বিচরণ করে, এক একটি দলে একটিমাত্র পুরুষ ময়ূর ও তিন থেকে পাঁচটি ময়ূরী থাকে। সবুজ ময়ূর উঁচুস্বরে ইয়েই-অও..... স্বরে ডাকে যা বহু দূর থেকেও শোনা যায়। ময়ূরীর ডাক অনেকটা অ্যাও-অ্যা....। ভয় পেলে এরা ডাকে কের্-র-র-র-রু...। সবুজ ময়ূর প্রধানত হালকা বনভূমি, বনভূমি সংলগ্ন ঘাসবন ও খোলা জায়গা, সাভানা, বনসংলগ্ন নদীর পাড়, ক্ষেতখামার ইত্যাদি এলাকায় খাবারের খোঁজে ঘুরে বেড়ায়। অনেকসময় গৃহপালিত হাঁস-মুরগীর সাথে ঘুরে ঘুরে খাবার খায়। এদের জীবনধারণের জন্য প্রচুর পানির দরকার হয়, সেকারণে পানির উৎসের আশেপাশেই এদের দেখা যায়। সারা পৃথিবীতে এক বিশাল এলাকা জুড়ে সবুজ ময়ূরের আবাস, প্রায় ৯ লাখ ৯১ হাজার বর্গ কিলোমিটার। আবাসস্থল এত বিশাল হলেও পুরো এলাকাটির মাত্র অল্পসংখ্যক এলাকায় বিচ্ছিন্নভাবে এদের বিস্তৃতি রয়েছে। আবার বিগত কয়েক দশকে এদের সংখ্যা ভয়াবহভাবে হ্রাস পেয়েছে। সে কারণে International Union for Conservation of Nature এই প্রজাতিটিকে Endengered বা বিপন্ন বলে ঘোষণা করেছে। সবুজ ময়ূর খুব কোলাহলপূর্ণ পাখি, একটু শব্দ হলে বা বিশ্রামের সময়ে এরা ডেকে ওঠে। ফলে এরা শিকারীর সহজ শিকারে পরিণত হয়। আবার বড়সড় আকার ও ঝলমলে পালকের জন্য এরা খুব সহজেই দৃষ্টিগ্রাহ্য হয়। নির্বিচারে শিকারের ফলে দিন দিন এদের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। এছাড়া বেআইনী ব্যবসা, আবাসস্থল ধ্বংস, বিচ্ছিন্ন বিস্তৃতি, অপরিকল্পিত উন্নয়ন, রোগবালাই, পরিবেশ দূষণ ও কীটনাশকের অবাধ ব্যবহারের ফলে সারা বিশ্বে সবুজ ময়ূর আশঙ্কাজনক হারে কমে যাচ্ছে। এ পর্যন্ত সবুজ ময়ূরের মোট তিনটি উপপ্রজাতি সনাক্ত করা গেছে। উপপ্রজাতিগুলো হচ্ছে:
P. m. spicifer - ১৮০৪ সালে ইংরেজ উদ্ভিদ ও প্রানি বিজ্ঞানী George Shaw এই উপপ্রজাতিটির সনাক্ত করেন ও বৈজ্ঞানিক নামকরণ করেন। এই উপপ্রজাতি উত্তর-পূর্ব ভারত, বাংলাদেশ এবং উত্তর-পশ্চিম মিয়ানমারে এদের সহজেই দেখা মিলত। এই উপপ্রজাতিটি সম্ভবত বিলুপ্ত হয়ে গেছে। উপপ্রজাতিটিতে নীলের ভাগ বেশি ও উজ্জ্বলতা বেশ কম।
P. m.imperator -১৯৪৯ সালে আমেরিকান পক্ষীবিজ্ঞানী Jean Théodore Delacour এই উপপ্রজাতিটির সনাক্ত করেন ও বৈজ্ঞানিক নামকরণ করেন।
মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, লাওস, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া ও চীনে এদের দেখা যায়। P. m.imperator প্রায় muticusএর মতই, তবে দেহতল বেশি গাঢ় ও চোখের পাশের হলুদ ছোপটি কম উজ্জ্বল।
P. m. muticus - ১৭৬৬ সালে কার্ল লিনিয়াস সবুজ ময়ূরের মূল প্রজাতিটির বৈজ্ঞানিক নামকরণ করেন। যা কেবলমাত্র ইন্দোনেশিয়ার জাভায় দেখা যায়। একসময় মালয় উপদ্বীপে বিস্তৃত থাকলেও সে এলাকায় এরা সম্পূর্ণ বিলুপ্ত। উপপ্রজাতিগুলোর মধ্যে এই উপপ্রজাতিটি সবচেয়ে উজ্জ্বল সবুজ আর এর ডানার পালকে গাঢ় সবুজ ও নীল বর্ণ থাকে।
বাংলাদেশে একসময় সবুজ ময়ূর প্রচুর পরিমাণে থাকলেও সম্প্রতি এদের দেখতে পাওয়ার কোন সুনির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণ নেই। বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী আইনে এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত।

কঙ্গো ময়ূরঃ
কঙ্গো ময়ূর আফ্রিকা মহাদেশের কঙ্গো অববাহিকার মধ্য কঙ্গোলিয়ান নিচু ভুমি থেকে গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র রাষ্ট্রের মধ্যে মধ্যে বিচরণ করে, এই প্রজাতিটি অন্য কোথাও পাওয়া যায় না। ১৯৩৬ সালে আমেরিকান পক্ষীবিজ্ঞানী জেমস চ্যাপিন ময়ূরের এই প্রজাতির সনাক্তকরন করেন এবং বৈজ্ঞানিক নামকরণ করেন Afropavo congensis। এই প্রজাতির পুরুষ ময়ূর আকারে ২৫-২৮ ইঞ্চি ও নারী ময়ূরী ২৪-২৫ ইঞ্চি আকারের হয়ে থাকে। অন্য দুইটি প্রজাতির ময়ূরের মতো এই প্রজাতির পুরুষ ময়ূরের শরীরের রং গাঢ় নীল, ধাতব সবুজ ও বেগুনি রঙের মিশ্রণ নেই। পুরুষ কঙ্গো ময়ূরের ঘাড় ও গলা লাল রঙের, পা ধূসর বর্ণের ও ১৪ টি কালো শক্ত পালক সমৃদ্ধ লেজ রয়েছে। নারী ময়ূরের ঘাড় ও গলা লাল রঙের, বাদামী লাল শরীরে কিছুটা সবুজ ময়ূরের মতো ধাতব সবুজ ও নীল রঙের মিশ্রণ দেখা যায় এবং উদর বা পেট কালো রঙের হয়ে থাকে। পুরুষ ময়ূরের মাথায় সাজানো সাদা রঙের চুলের মতো দেখতে ছোট আকারের ঝুঁটি থাকে, নারী ময়ূরের মাথায় বাদামী রঙের খাটো ঝুঁটি থাকে। এ প্রজাতির নারী-পুরুষ উভয় ই অপ্রাপ্তবয়স্ক এশিয়ান ময়ূরের মতো দেখায়। এশিয়ান পুরুষ ময়ূর যেখানে প্রজনন মৌসুমে তার বিশাল আকৃতির পেখম মেলে নারী পাখিকে আকৃষ্ট করে থাকে, সেখানে পুরুষ কঙ্গো ময়ূর তার লেজের পালক তুলে নারী ময়ূরকে আকৃষ্ট করে থাকে। অন্যান্য ময়ূরের মতো কঙ্গো ময়ূর সর্বভুক হলেও এরা মূলত ফল ও পোকা খেয়ে থাকে। পাখির আবাসস্থাল বন উজাড় অবৈধ শিকার ও বেআইনিভাবে বিক্রির ফলে ময়ূরের এই প্রজাতিটি পরিমাণে হ্রাস পাচ্ছে। কঙ্গো ময়ূর আবদ্ধভাবে পালন করা না হলেও এই প্রজাতিটি বেলজিয়ামের এন্টওয়ারপ চিরিয়াখানা ও গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র রাষ্ট্রের জাতীয় সলঙ্গা পার্কে আবদ্ধভাবে প্রজন করা হচ্ছে। কঙ্গো ময়ূর গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র রাষ্ট্রের জাতীয় খেতাবপ্রাপ্ত পাখি। যেহেতু কঙ্গো ময়ূর ব্যাপকভাবে পালন করা হয় না, তাই কঙ্গো ময়ূর নিয়ে আলোচনা সাধারণ জ্ঞানের মধ্যে ই সীমিত থাকলো।

ময়ূরের জন্য সঠিক বাসস্থানঃ
ময়ূর আকারের দিক থেকে বিশাল আকৃতির পাখি, যার জন্য বড় আকারের শেড দরকার। ময়ূর বাড়ির ছাদে, বাড়ির আঙ্গিনায় অথবা রিসোর্ট এ শেড করে পালন করা যেতে পারে, এমনকি গ্রামে মুরগির সাথেও পালন করা যেতে পারে। ময়ূর ১:১ অথবা ১:৩ অনুপাতে পুরুষ নারী পালন করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে এক জোড়ার জন্য কমপক্ষে ২৪X১২X২৪ ফুট বড় আকারের শেড বা এর থেকে বড় আকারের শেড দেয়া উচিৎ। ৩ বা এর অধিক ময়ূরী একত্রে রাখলে, ময়ূরীদের নিজেদের মধ্যে মারামারি করে আহত বা দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য প্রতিটি ময়ূরীর জন্য ২৫ বর্গফুট জায়গা বরাদ্দ রাখতে হবে।
ময়ূর উঁচু জায়গায় বসতে পছন্দ করে, তাই শেড এর উপরের দিকে মেঝে থেকে ৮ ফুট উপরে গাছের ডাল বা বাঁশ শক্ত করে লাগিয়ে দিতে হবে। ময়ূর দৌড়ে উড়তে পারে তাই পর্যাপ্ত জায়গা থাকতে হবে ডানা মেলে উড়ার জন্য।

খাদ্যভাসঃ
ময়ূর সর্বভুক একটি পাখি। ময়ূর শস্য দানা, বীজ, কচি ঘাস, তৃণ, কচি উদ্ভিদের কাণ্ড, ফুলের কলি, রসালো ফল সহ ঘাসফড়িং, গুবরে পোকা, মথ, ফড়িং, ঝিঁঝিঁ পোকাসহ বিভিন্ন জাতের পোকামাকড়, ব্যাঙ, গিরগিটি ও ছোট সাপ খায়। ময়ূরকে ধান, চিনাবাদাম, সূর্যমুখী ফুলের বীজ, ভুট্টা ভাঙ্গা, সয়াবিন, গম ও যব দেয়া যেতে পারে। ময়ূর বেরি জাতীয় রসালো ফল খুব পছন্দ করে আঙ্গুর, স্ট্রবেরি, ব্ল্যাক বেরি, রেড বেরি সহ পেঁপে, আনার এর দানা ও কলা দেয়া যায়। ব্রকলি কুঁচি, গাজর কুঁচি, মিষ্টি আলু, শিমের বীচি, মটরশুঁটি সহ যে কোন সবুজ শাক-সবজি কুঁচি ছোট থেকে অভ্যাস করে খাওয়ানো যেতে পারে। প্রোটিনের জন্য ময়ূরকে তেল-মসলা ও লবণ ছাড়া মুরগির মাংস সিদ্ধ, মিলওয়ার্ম খাওয়ানো যেতে পারে। ময়ূরের বাচ্চা জন্মানোর পরে মিলওয়ার্ম ও বয়লার স্টারটার পোল্ট্রি ফিড খাওয়ানো যেতে পারে। ময়ূরের পালক নির্মোচন বা মোল্টিং এর সময়ে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিনের সরবরাহ এর জন্য প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার দিতে হবে। ময়ূরকে প্রতিদিন ফুটানো তাজা পানি দিতে হবে।

লিঙ্গ সনাক্তকরণঃ
অপ্রাপ্তবয়স্ক ময়ূরের বাচ্চার নারী-পুরুষ চেনা খুব ই কঠিন, অপ্রাপ্তবয়স্ক ময়ূরের বাচ্চারা দেখতে অনেকটা প্রাপ্তবয়স্ক ময়ূরীর মতো হয়ে থাকে। অপ্রাপ্তবয়স্ক ময়ূরের বাচ্চার সঠিক ও নির্ভুল লিঙ্গ সনাক্তকরণের জন্য বাচ্চাদের ডিএনএ পরীক্ষা করা যেতে পারে। প্রাপ্তবয়স্ক ময়ূরের নারী-পুরুষ পাখি দেখে ই সনাক্ত করা যায়। প্রাপ্তবয়স্ক ময়ূরের পালকের রং অধিক উজ্জ্বল ও লেজের পরে ২ ফিটের অধিক কভার্ট বা পেখম এর পালক থাকে, পুরুষ ময়ূর গুলো নারী ময়ূরের থেকে আকারে ও ওজনে বেশি হয়ে থাকে। পুরুষ ময়ূরের লেজের পেখমে ২০০ টিরও অধিক সংখ্যক পালক থাকে, এই পালক আকারে ৪-৫ ফুট এর মতো হয়ে থাকে। যেখানে ময়ূরীর লেজ খাটো ও পেখম এর পালক নেই। প্রাপ্তবয়স্ক ময়ূরের পায়ের পিছনের দিকে কাঁটার মতো দেখতে পার্শ্ব শাখা দেখা যায়, সেখানে প্রাপ্তবয়স্ক ময়ূরীর পায়ের পিছনের দিকে কাঁটার মতো দেখতে পার্শ্ব শাখা ভোঁতা হয় অথবা থাকে না।

প্রজননঃ
সাধারণত ময়ূরী ১২-১৮ মাসের মধ্যে প্রজনন ক্ষমতা অর্জন করে থাকে, তবে ময়ূরের প্রজনন ক্ষমতা অর্জন করতে ২.৫-৩ বছর পর্যন্ত সময় লাগে। ইন্ডিয়ান ময়ূর ও সবুজ ময়ূর জানুয়ারী-মে এর মধ্যে প্রজনন করে থাকে। বনে ঝোপ-ঝাড়ের মধ্যে গর্ত করে ময়ূরী ডিমে পাড়ে। আবদ্ধভাবে পালন করা ময়ূরের ক্ষেত্রে ফলের ঝুড়ি অথবা ময়ূরীর আকারের সাথে সামঞ্জস্য আকারের কাঠের ঝুড়ির মধ্যে নরম ঘাস, খড়কুটা ঝুড়ির মধ্যে দিয়ে বিছানা তৈরি করে দিয়ে আলাদাভাবে নরম ঘাস ও খড়কুটা দিতে হবে ময়ূরীকে বাসা তৈরির জন্য। প্রজনন ঋতুতে ময়ূর ময়ূরীকে আকৃষ্ট করার জন্য পেখম মেলে ডানা কাপিয়ে কোর্টশিপ ড্যান্স করে ও শব্দ করে ময়ূরীকে সঙ্গমের জন্য আকৃষ্ট করে থাকে। এই ধরনের আচরণ ময়ূরের প্রজনন ঋতুর সংকেত দেয়। ময়ূরের সফল প্রজননের প্রধান শর্ত হচ্ছে আকর্ষণীয় ময়ূর দিয়ে প্রজনন করানো। কারণ ময়ূরীরা সাধারণত বড় ও আকর্ষণীয় আকারের পেখম, অধিক উজ্জ্বল এবং ময়ূরীকে অধিক সুরক্ষা দিতে পারবে এমন ময়ূর পছন্দ করে থাকে। এই জন্য প্রজনন ঋতুতে ময়ূর তার বিশাল আকৃতির পেখম ফ্যানের মতো খুলে ঝাঁকিয়ে কোর্টশিপ ড্যান্স করতে থাকে এবং শব্দ করে ময়ূরীকে সঙ্গম করার জন্য আকৃষ্ট করে থাকে, সে সময় ময়ূরী ময়ূরের ডাকে আকৃষ্ট হলে লেজের পালক উঁচু করে ময়ূরের ডাকে সাড়া দেয় এবং নিচু হয়ে বসে সঙ্গম করার জন্য। ময়ূর একাধিক নারীগামী পাখি, প্রজনন ঋতুতে একটি ময়ূর একাধিক ময়ূরীর সাথে সঙ্গম করে থাকে। সেক্ষেত্রে একটি ময়ূরের সাথে ৩-৫ টি ময়ূরী রাখা যেতে পারে। ময়ূরী সাধারণত ৪-১২ টি ডিম দিয়ে থাকে এবং গড়ে ৬ টি ডিম দিয়ে থাকে। ডিমে তা দেয়ার ২৮-৩০ দিনের মধ্যে ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়, বাচ্চাগুলো মায়ের সাথে থাকে এবং বড় হতে থাকে। আবদ্ধভাবে পালনের ক্ষেত্রে ময়ূরী ডিমে তা দিয়ে বাচ্চা ফোটানোর পাশাপাশি দেশি মুরগি দিয়েও বাচ্চা ফোটানো যায়। সে ক্ষেত্রে মা পাখি গুলো ডিমে তা দেয় এবং বাচ্চা ফুটে বের হলে মায়ের সাথে থেকে মায়ের নিবিড় যত্নে বড় হতে থাকে। ময়ূরী অথবা দেশি মুরগি দিয়ে ডিম ফোটানোর ক্ষেত্রে পাখির ডিমে তা দেয়ার ঝুড়ির ভিতরে খাবার ও পানির ব্যাবস্থা বাধ্যতামূলকভাবে নিশ্চিত করতে হবে। ইনকিবেটর দিয়েও ময়ূরীর ডিম ফুটানো যায়, সেক্ষেত্রে ডিম ফুটে বাচ্চা বের হলে ৯৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রায় ব্রুডারে রাখতে হবে এবং প্রতি সপ্তাহে ৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট কমিয়ে দিতে হবে। এভাবে করে কক্ষ তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ৭৭ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রা পর্যন্ত আসলে বাচ্চাদের স্বাভাবিক ভাবে রাখা যাবে। ময়ূরী অথবা দেশি মুরগি দিয়ে ডিম ফুটালে আলাদা করে তাপ দেয়ার দরকার পরে না, কারণ বাচ্চা গুলো নির্দিষ্ট একটা বয়স পর্যন্ত মায়ের ডানার ও বুকের নিচে থাকে। বাচ্চা ফুটে বের হলে বাচ্চাদের বয়লার স্টারটার ফিড খাওয়ানো যেতে পারে এবং ২৪-২৫% প্রোটিন আছে এমন স্টারটার ফিড নির্বাচন করতে হবে। প্রজনন ঋতুতে ময়ূরীর জন্য জন্য অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম, ফসফরাস সহ অতি প্রয়োজনীয় মিনারেল এর জন্য লাইম স্টোন এর গুড়া, ডিমের খোসার গুড়া, বিদেশি মিনারেল এর গুড়া দেয়া উচিৎ।

মিউটেশন ও হাইব্রিডঃ
সবুজ ময়ূরের ৩ টি উপপ্রজাতি ছাড়া কোন মিউটেশন নেই। তবে আবদ্ধভাবে ইন্ডিয়ান ময়ূরের নির্বাচনী প্রজননের মাধ্যমে কিছু কালার ও প্যাটার্ন মিউটেশন সৃষ্টি করা সম্ভব হয়েছে। ইন্ডিয়ান ময়ূরের মিউটেশন গুলো ব্যাপক জনপ্রিয় ও দেখতে অনেক আকর্ষণীয়। প্যাটার্ন মিউটেশন এর মধ্যে রয়েছে ব্ল্যাক সোলডার্ড বা জাপানেড মিউটেশন, হোয়াইট মিউটেশন(ব্লু), ব্লু পাইড, সিলভার পাইড ইত্যাদি। কালার মিউটেশন এর মধ্যে মিডনাইট, ক্যামেও, চারকোল, ব্রোঞ্জ, পীচ, পার্পেল, ওপাল, টউপি, হেজেল ইত্যাদি। কালার মিউটেশন ও প্যাটার্ন মিউটেশন প্রজনন করিয়ে দুই শতাধিক এর বেশি কম্বিনেশন মিউটেশন তৈরি করা হয়েছে। সবুজ ময়ূর(Pavo muticus) ও ইন্ডিয়ান ময়ূর(Pavo cristatus) এর মদ্ধে ক্রস করালে "স্পেলডিং (Spalding)" নামক হাইব্রিড ময়ূর জন্ম নেয়। হাইব্রিড ময়ূরের আয়ুকাল ও ডিম উৎপাদন তুলনা মূলক অন্যান্য ময়ূরের থেকে কম হয়ে থাকে।


ময়ূরের পৌরাণিক ও ধর্মীয় তাৎপর্যঃ
ময়ূরের কথা গান, কবিতা, পৌরাণিক কাহিনী সহ বিভিন্ন ধর্মে বিশেষভাবে উল্লেখ আছে। হিন্দু ধর্মের পৌরাণিক যুদ্ধদেবতা কার্তিকের আরোহণ বাহক ছিলো ময়ূর। হিন্দু ধর্মানুসারীদের আরাধ্য বিশিষ্ট একজন দেবতা শ্রীকৃষ্ণের মাথার মুকুটে ময়ূরের পালক অলঙ্কৃত ছিলো। শ্রীলঙ্কার সিংহালিস রাশিচক্রে ময়ূরের প্রতীক রয়েছে। গৌতম বুদ্ধের দর্শনশাস্ত্রে ময়ূর জ্ঞানের প্রতীক। ময়ূরের পালক অনেক ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ব্যাবহৃত হয় এবং ময়ূরের আকৃতির ছবি মন্দিরের স্থাপত্যে দেখা যায়, প্রাচীনকালের কয়েন এ ময়ূরের আকৃতির ছবি দেখা যায়। ময়ূরের এমন অনেক পৌরাণিক ও ধর্মীয় তাৎপর্য রয়েছে।

পোষা পাখি হিসেবে ময়ুরঃ
ময়ূর পৃথিবীর সবথেকে সুন্দর এক পাখির প্রজাতি, যা সৌন্দর্য বর্ধক পাখি হিসেবে যে কোন পাখি পালকের মনে ও এভিয়ারিতে স্থান করে নিতে সক্ষম। ময়ূরের রঙ্গিন পালক দিয়ে অলঙ্কৃত সুসজ্জিত পালক এবং প্রজনন কালের পেখম মেলে প্রজনন নৃত্ত বা কোর্টশিপ ড্যান্স চমৎকার ও উপভোগ করার মতো একটি দৃশ্য। যা যে কোন পাখি পালকের হৃদয়কে কোমল ও সব ক্লান্তি শিথিল করতে সক্ষম। তবে ময়ূর বিকট শব্দ করে থাকে, বিশেষ করে প্রজনন ঋতুতে উচ্চ স্বরের শব্দ প্রকোপ হয়ে থাকে। যার ফলে আশে পাশের পাড়া-প্রতিবেশিদের অসুবিধা হতে পারে। গ্রামের পরিবেশে ময়ূর পালা উত্তম। ময়ূর যে কোন এভিয়ারি বা রিসোর্ট এর আকর্ষণীয় একটি দর্শনীয় পাখি হতে পারে। ময়ূর খুব ই শক্ত প্রজাতির পাখি, সহজে রোগাক্রান্ত হয় না। সুষম খাবার, প্রতিদিন পরিষ্কার ফুটানো পানি, পর্যাপ্ত উড়ার জায়গা ও বিচরণের জায়গা এবং সঠিক পরিচর্যা করলে ময়ূর অনেক দিন বাঁচবে এবং সহজে রোগাক্রান্ত হবে না। সবুজ ময়ূর(Pavo muticus) পালন করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারের অধীনস্থ বন মন্ত্রণালয় থেকে অনুমতি নিতে হয়। মনোজিৎ মিত্রের লেখা নিচের চরণ থেকে সহজে ই বোঝা যায় ময়ূর কতোটা বৃষ্টিতে বা জলপ্রপাতে ভিজে গোসল করতে পছন্দ করে। তাই ময়ূরের শেড এ কৃত্তিম ঝর্ণা দেয়া যেতে পারে।

"পেখমের পিছে লিখে রাখো ময়ূর বৃষ্টির বেদনা।
ময়ূরীরা সব দূর জঙ্গলে ভিজছে ঝরনায়
তাদের উৎসবে, নাচে আলোময়ী রাত
রতির মুদ্রায় মেশা আততায়ী আঘাত।

নিঃসঙ্গ ময়ূর পরাণে শুধুই প্রেম, প্রতারণা তীর নাইযে কেনা
পেখমের পিছে লিখে রাখো তাই, বৃষ্টির বেদনা"

03/10/2021

📌২গ্রে প্যারোট এর মুলত ২ টি প্রজাতি পাওয়া যায়।

১। African grey parrot
২। Timneh grey parrot

এই ২ প্রজাতির ই কোনো উপপ্রজাতি বা Subspecies নেই। তবে অঞ্চল ভেদে African grey parrot এর আকার এবং রঙ এর পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। যা ছবি দেখলেই বুঝতে পারবেন।

02/10/2021

02/10/2021

📌ম্যাকাও, বিশ্বের দৈত্যাকার পাখি হিসাবে পরিচিত।
এরা হ'ল দীর্ঘ লেজবিশিষ্ট আমেরিকান তোতা। লম্বায় পঁচিশ থেকে পঁয়তাল্লিশ সেন্টিমিটার।
এদেরকে প্রধানত দুটি দলে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়,বড় ম্যাকাও এবং মিনি ম্যাকাও। বেশিরভাগ সময় এরা জোড়ায় থাকা পছন্দ করে। মূলত দক্ষিণ আমেরিকার গ্রীষ্মপ্রধান অঞ্চলে ম্যাকাওদের বাসস্থান, যদিও এরা এক জায়গায় স্থায়ীভাবে বসবাস করতে পছন্দ করে না।
এরা সম্পূর্ণরূপে নিরামিষাশী এবং এদের পছন্দসই খাবার হ'ল ফলের বীজ, ফল, ফুল, পাতা, তাল, বাদাম, ডুমুর, বেরি এবং উন্মুক্ত নদীর তীর থেকে মাটি, যা গবেষকরা বিশ্বাস করেন যে এটি তাদের কিছু খাবারের মধ্যে থাকা বিষাক্ত পদার্থকে নিষ্ক্রিয় করার একটি মাধ্যম। কিছু ম্যাকাও প্রজাতির খাদ্যতালিকাগত চাহিদা অন্যান্য তোতাপাখির চেয়ে ম্যাকাও, বিশ্বের দৈত্যাকার পাখি হিসাবে পরিচিত।
এরা হ'ল দীর্ঘ লেজবিশিষ্ট আমেরিকান তোতা। লম্বায় পঁচিশ থেকে পঁয়তাল্লিশ সেন্টিমিটার।
এদেরকে প্রধানত দুটি দলে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়,বড় ম্যাকাও এবং মিনি ম্যাকাও। বেশিরভাগ সময় এরা জোড়ায় থাকা পছন্দ করে। মূলত দক্ষিণ আমেরিকার গ্রীষ্মপ্রধান অঞ্চলে ম্যাকাওদের বাসস্থান, যদিও এরা এক জায়গায় স্থায়ীভাবে বসবাস করতে পছন্দ করে না।
এরা সম্পূর্ণরূপে নিরামিষাশী এবং এদের পছন্দসই খাবার হ'ল ফলের বীজ, ফল, ফুল, পাতা, তাল, বাদাম, ডুমুর, বেরি এবং উন্মুক্ত নদীর তীর থেকে মাটি, যা গবেষকরা বিশ্বাস করেন যে এটি তাদের কিছু খাবারের মধ্যে থাকা বিষাক্ত পদার্থকে নিষ্ক্রিয় করার একটি মাধ্যম। কিছু ম্যাকাও প্রজাতির খাদ্যতালিকাগত চাহিদা অন্যান্য তোতাপাখির চেয়ে আলাদা কারণ তাদের খাদ্যে আরও চর্বি প্রয়োজন। এদের অভিযোজনগুলির মধ্যে রয়েছে ভীতিজনক শক্তিশালী চঞ্চু যা শক্ত বাদাম এবং বীজের খোলা ফাটানোর জন্য ব্যবহার করে।
একটি ভাল সামাজিক ম্যাকাও বন্ধুত্বপূর্ণ এবং স্নেহময় সঙ্গী হতে পারে। যখন এদের মেজাজ ভালো থাকে তখন এরা এক ধরনের কোলাহল তৈরি করে এবং তাদের ক্লাউনিশ আচরণগুলি অবশ্যই মনোযোগ আকর্ষণ করবে। ম্যাকাওকে কথা বলা শেখানো যেতে পারে এবং এদের হুইসেল বা শব্দ অনুকরণ করার প্রবণতা আছে এবং এরা বাড়ির ভিতরে এবং বাইরে শব্দ শুনতে পায়।
একটি ম্যাকাও কি ভাল পোষ্য হতে পারে? হ্যাঁ পারে। এটি অনেকগুলি বিষয়ের উপর নির্ভর করে। যেমন পরিবারে একটি ম্যাকাও যোগ করা মানে যিনি পুষছেন তার বাসস্থান, সময়, ব্যক্তিত্ব, বিবেচনা করলে ম্যাকাও একটি ভাল সঙ্গী হয়ে উঠতে পারে। কারণ ম্যাকাওদের প্রশস্ত বাসস্থান প্রয়োজন এবং এরা সাধারণত দীর্ঘজীবী হয়,পরিবারে একটি ম্যাকাও যোগ করার আগে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে চিন্তা করা প্রয়োজন।
মোটামুটি একত্রিশটি পরিচিত প্রজাতির অ্যামাজন তোতাপাখির পরিবার সবচেয়ে বড় গোষ্ঠী, যার মধ্যে প্রায় ষোলটি বিলুপ্তির পথে।আলাদা কারণ তাদের খাদ্যে আরও চর্বি প্রয়োজন। এদের অভিযোজনগুলির মধ্যে রয়েছে ভীতিজনক শক্তিশালী চঞ্চু যা শক্ত বাদাম এবং বীজের খোলা ফাটানোর জন্য ব্যবহার করে।
একটি ভাল সামাজিক ম্যাকাও বন্ধুত্বপূর্ণ এবং স্নেহময় সঙ্গী হতে পারে। যখন এদের মেজাজ ভালো থাকে তখন এরা এক ধরনের কোলাহল তৈরি করে এবং তাদের ক্লাউনিশ আচরণগুলি অবশ্যই মনোযোগ আকর্ষণ করবে। ম্যাকাওকে কথা বলা শেখানো যেতে পারে এবং এদের হুইসেল বা শব্দ অনুকরণ করার প্রবণতা আছে এবং এরা বাড়ির ভিতরে এবং বাইরে শব্দ শুনতে পায়।
একটি ম্যাকাও কি ভাল পোষ্য হতে পারে? হ্যাঁ পারে। এটি অনেকগুলি বিষয়ের উপর নির্ভর করে। যেমন পরিবারে একটি ম্যাকাও যোগ করা মানে যিনি পুষছেন তার বাসস্থান, সময়, ব্যক্তিত্ব, বিবেচনা করলে ম্যাকাও একটি ভাল সঙ্গী হয়ে উঠতে পারে। কারণ ম্যাকাওদের প্রশস্ত বাসস্থান প্রয়োজন এবং এরা সাধারণত দীর্ঘজীবী হয়,পরিবারে একটি ম্যাকাও যোগ করার আগে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে চিন্তা করা প্রয়োজন।
মোটামুটি একত্রিশটি পরিচিত প্রজাতির অ্যামাজন তোতাপাখির পরিবার সবচেয়ে বড় গোষ্ঠী, যার মধ্যে প্রায় ষোলটি বিলুপ্তির পথে।

02/10/2021

📍 কিউই পাখি
Apterya australis
নিউজিল্যান্ডের জাতীয় পাখি কিউই।
এদের নামানুসারেই নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেটারদের কিউই বলা হয়।
পাখিটি আকারে একটি মাঝারি মুরগির সমান। ডানা নেই বলে ওরা উড়তে পারে না।এদের দৌড়বাজ পাখি বলা হয়। এরা নিশাচর পাখি। দিনের বেলা ওরা ২ ফুট বেশি দূরের জিনিস দেখতে পায় না।
সারা বিশ্বে এটিই সম্ভবত একমাত্র পাখি যার নাসারন্ধ্র অবস্থিত চঞ্চুর/ঠোট একদম শেষ প্রান্তে।
পাখিটির শরীরের দৈর্ঘ্যের তিন ভাগের এক ভাগ হচ্ছে ঠোট। ঠোটের মাথায় নাসা ছিদ্র থাকায় ঠোট দিয়ে মাটি থেকে জ্যান্ত খাবার বের করে আনে।

কিউই পাখির গাভর্তি বাদামি ঘন পালক। কিউই পাখির একটি ব্যতিক্রমী দিক হচ্ছে ডিম।আকারে মুরগীর সমান হলেও, এরাএকটি মুরগির ডিমের ছয় গুণ বড় ডিম পাড়ে।

কিউই পাখির আরেকটি মজার দিক হচ্ছে, পুরুষ ও স্ত্রী-কিউই একবার জুটি বাঁধলে একটানা ২০ বছর পর্যন্ত একসঙ্গে কাটিয়ে দিতে পারে।