12/10/2022
💢 আজ আপনাদের কাছে "ফাউমি" মুরগি সম্পর্কে কিছু তথ্য তুলে ধরবো।
🐓 ফাউমি জাতের মোরগ-মুরগীর উৎপত্তিস্থল মিশর।
👉 বৈশিষ্ট্য :
১. পালকের রং কালো ও সাদা ফোটা ফোটা, ঘাড়ের পালক সাদা।
২. কানের লতি এবং গায়ের চামড়া সাদা।
৩. ডিমের খোসা সাদা।
৪. ডিমের খোসা সাদা।
৫. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি।
👉 উপযোগীতাঃ ডিম উৎপাদনকারী জাত হিসাবে পরিচিত এ জাত আমাদের দেশীয় আবহাওয়ায় পালনের উপযোগী। এদের বার্ষিক গড় ডিম উৎপাদন ১৫০- ২০০ টি।
💢 এখন চলুন জেনে নেয়া যাক ফাউমি জাতের মোরগ-মুরগীর পালন সম্পর্কে
👉 ঘর তৈরি : মুরগির জন্য খোলামেলা ঘর হতে হবে। ১.৫ মিটার (৫ ফুট) লম্বা X ১.২ মিটার (৪ ফুট) চওড়া এবং ১ মিটার (৩.৫ ফুট) উঁচু ঘর তৈরি করতে হবে। ঘরের বেড়া বাঁশের তরজা বা কাঠের তক্তা দিয়ে তৈরি করতে হবে। এছাড়া মাটির দেয়ালও তৈরি করা যাবে। বেড়া বা দেওয়ালে আলো বাতাস চলাচলের জন্য ছিদ্র থাকতে হবে। ঘরের চাল খড়, টিন বা বাঁশের তরজার সাথে পলিথিন ব্যবহার করে তৈরি করা যাবে। প্রতি ১০-১৫টি মুরগির জন্য এইরকম একটি করে ঘর তৈরী করতে হবে ।
👉 খাবার : বাড়ির প্রতিদিনের বাড়তি বা বাসী খাদ্য যেমন ফেলে দেওয়া এঁটোভাত, তরকারি, ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা গম, ধান, পোকামাকড়, শাক সবজির ফেলে দেওয়া অংশ, ঘাস, লাতা পাতা, কাঁকর, পাথর কুচি ইত্যাদি মুরগি কুড়িয়ে খায়।
👉 পরিচর্যা করা : ছেড়ে পালন পদ্ধতিতে মুরগি পরিচর্যার জন্য সময় বা লোকজনের তেমন দরকার পড়ে না। তারপরও কিছু বিষয় লক্ষ্য রাখতে হয়। সকালে মুরগির ঘর খুলে কিছু খাবার দিতে হবে। সন্ধ্যায় মুরগি ঘরে ওঠার আগে আবার কিছু খাবার দিতে হবে। ঘরে উঠলে দরজা বন্ধ করে দিতে হবে।
মুরগির পায়খানা ঘরের মেঝেতে যেন লেপ্টে না যায় সেজন্য ঘরের মেঝেতে ধানের তুষ, করাতের গুঁড়া ২.৫ সে.মি. (১ ইঞ্চি) পুরু করে বিছাতে হবে। পায়খানা জমতে জমতে শক্ত জমাট বেঁধে গেলে বারবার তা উলট-পালট করে দিতে হবে এবং কিছুদিন পর পর পরিষ্কার করতে হবে। এ পদ্ধতিতে দেশি মোরগ পালন করা গেলে প্রায় তেমন কোন খরচ ছাড়াই ভাল একটা মুনাফা পাওয়া যাবে।
👉 প্রতিবন্ধকতা ও সমাধান : মুরগি পালনে প্রধান প্রতিবন্ধকতা রাণীক্ষেত রোগ, এ রোগের প্রচলিত নাম চুনা মল ত্যাগ। পাখি হা করে ঠোঁট তুলে শ্বাস নেয়। ঝিমুনী ও ধীরে ধীরে পক্ষাঘাত হয়। বড় মুরগির নাকে শব্দ হয়। ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত এই রোগটি মুরগির শ্বসনতন্ত্র ও স্নায়ুতন্ত্রের উপর বিশেষ আক্রমণ করে।
💢 রাণীক্ষেত রোগের লক্ষণ সমূহ;-
👉 মুরগী খাওয়া বন্ধ করে দেয়।
👉 মাথা নিচু ও চোখ বন্ধ করে ঝিমাতে থাকে।
👉 সাদা চুনের মত পাতলা মল ত্যাগ করে।
👉 নাক দিয়ে সর্দি ও মুখ দিয়ে লালা ঝরে।
👉 শ্বাস প্রশ্বাস দ্রুত হয় এবং হা করে নিঃশ্বাস নেয়।
👉 ঘাড় বেঁকে যায়, কখনও কখনও একই স্থানে দাঁড়িয়ে চক্রাকারে ঘুরতে থাকে।
👉 মুরগী দূর্বল হয়ে ঠোঁট ও বুক মাটিতে লাগিয়ে বসে পড়ে।
💢 রাণীক্ষেত রোগের প্রতিরোধ ও চিকিতসা :
প্রতিষেধক টিকা প্রয়োগ এ রোগের হাত থেকে পরিত্রাণের একমাত্র উপায়।
রোগাক্রান্ত মোরগ-মুরগীর ক্ষেত্রে দ্বিতীয় পর্যায়ের ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ থেকে রক্ষা করার জন্য উচচক্ষমতা সম্পন্ন এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করা যেতে পারে।
আক্রান্ত মুরগীকে অবশ্যই অন্যান্য মুরগীর সংস্পর্ষ থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে। মরে যাওয়া মুরগী ২-৩ হাত মাটির নীচে পুঁতে ফেলতে হবে।