
15/03/2025
কবুতর অসুখে চিকিৎসা কেন ব্যর্থ হচ্ছে?
অনেকদিন কবুতরের কোন টপিক নিয়া লেখা হয় না। কবুতর পালা ছেড়ে দিয়েছি বা আগের মত কবুতর নিয়ে পড়াশোনা করি না ব্যাপারটা এমন ও না। কেন জানি মন চায় না আজকাল লিখতে। যাইহোক, যারা দীর্ঘদিন ধরে কবুতর পালন করছেন, একটা জিনিস হয়তো তারা অনেকেই লক্ষ্য করেছেন । ইদানীং কবুতর অসুস্থ হলে পুরাতন ওষুধ-চিকিৎসা পদ্ধতি বেশিরভাগই কিন্তু কাজ করছে না? গত ১-২ বছরে এই সমস্যা বেড়েছে! কেনো পুরনো চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যার্থ হচ্ছে? ভেবেছেন কি?
১. অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স : আগে যেসব অ্যান্টিবায়োটিক (যেমন- এনরোফ্লক্সাসিন, টাইলোসিন, লিভোফ্লুক্সাসিন ) ম্যাজিকের মত কাজ করত, এখন ব্যাকটেরিয়া সেগুলোকে প্রতিরোধ করতে শিখেছে! WHO-র রিপোর্ট অনুযায়ী, পশুপাখির চিকিৎসায় অতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারে এই সমস্যা বিশ্বব্যাপী! আমার পুরাতন পোস্টগুলি ঘাটলে দেখা যাবে এমন যে হবে এটা কিন্তু আমি কয়েক বছর আগে থেকেই সর্তক করে এসেছি।
২. নতুন ভাইরাসের মিউটেশন: সেদিন অস্ট্রেলিয়ান একটা আর্টিক্যালে দেখলাম "পিজিওন পক্স", "PMV (প্যারামিক্সোভাইরাস)", বা "ক্যানকার"- নতুন স্ট্রেইন ছড়াচ্ছে! পুরনো টিকা বা ওষুধ নতুন ভাইরাল স্ট্রেইনের বিরুদ্ধে বেশিরভাগ অকার্যকর!
৩. পরিবেশ দূষণের প্রভাব: বায়ুদূষণ, কীটনাশকের ব্যবহার, বা খাদ্যে ভেজাল কবুতরের ইমিউনিটি কমিয়ে দিচ্ছে! ফলে, অসুখ হলে সুস্থ হতে সময় লাগছে বেশি।
৪. ভুল চিকিৎসা পদ্ধতি: অনেকেই ইউটিউব বা ফেসবুকের টিপসে ভরসা করে ভুল ওষুধ (যেমন- প্যারাসিটামল, মানুষের অ্যান্টিবায়োটিক) ভুল ডোজিং ফরম্যাটে ব্যবহার করছেন, যা কবুতরের লিভার-কিডনি নষ্ট করছে! ব্যাঙ্গের ছাতার মত গজানো ইউটিওবাল এবং ফেসবোকাররা ( সকলে নয় ) ইদানীং কবুতরের এমন এমন সব ট্রিটমেন্ট এবং সাজেশন পোস্ট করে। সেগুলো দেখে নিজেই কনফিউজড হয়ে যাই এত বছর কবুতর নিয়ে যে ঘাটাঘাটি করলাম এ পড়াশোনা, এক্সপেরিমেন্ট, অভিজ্ঞতা সবই কি ভুল কিনা?
সমাধানের কার্যকরী উপায়
১.এক্সপার্ট ডায়াগনোসিস: লক্ষণ দেখে অনুমান নয়! বড়ভাই বলছে সেজন্য নয়? ভেটেরিনারি সায়েন্স কি বলতেছে? এক্সপার্টরা কি বলতেছে? এসব যাচাই বাছাই করে ডিসিশন নিন। নিজে না পারলে বিশেষজ্ঞ এভিয়ান ভেটেরিনারির ডাক্তারদের পরামর্শ নিন। ল্যাব টেস্ট করে জেনে নিন অসুখটি ব্যাকটেরিয়াল, ভাইরাল, নাকি ফাঙ্গাল! তারপর ট্রিটমেন্ট করুন। ফলাফল নিজেই টের পাবেন।
২.আপডেটেড টিকা: PMV বা পক্সের টিকা নিয়মিত দিন। নতুন স্ট্রেইনের টিকা বাজারে এসেছে (যেমন- Nobilis, PMV CLONE 45), সেগুলো ব্যবহার করুন।
৩. প্রোবায়োটিক ও প্রাকৃতিক প্রতিকার: অ্যান্টিবায়োটিকের বিকল্প হিসাবে প্রোবায়োটিক সাপ্লিমেন্ট (ল্যাকটোব্যাসিলাস) দিন, যা ইমিউনিটি বাড়ায়! ন্যাচেরাল প্রোবায়োটিকস ও ব্যাবহার করতে পারেন। যেমন টকদই। এটা কিন্তু বেশ ভাল একটি ন্যাচেরাল প্রোবায়োটিকস ।
প্রাকৃতিক উপাদান যেমন এসিভি, নিমপাতা, আদার রস, হলুদ, মধু,বিভিন্ন মসল্লা ও হার্বস কবুতরকে খাওয়ান অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিভাইরাল হিসেবে এগুলো বেশ ভাল কাজ করে এবং দামে ও সস্তা।
৪. পরিবেশ পরিচ্ছন্নতা: লফট নিয়মিত পরিষ্কার করুন। নতুন কবুতর এনে ১০-১৫ দিন কোয়ারেন্টাইন করে তারপর মূল লফটে যোগ করুন! এটাকে রীতিমত ফরজ কাজ বানিয়ে নিন।
⚠️ সতর্কতা: এই আর্টিকেল শুধু সর্তকতার জন্য। চিকিৎসার জন্য সর্বদা অভিজ্ঞ এভিয়ান ভেটেরিনারির পরামর্শ নিন।
✅ শেয়ার করতে ভুলবেন না!
কবুতরের জীবন বাঁচান, সচেতনতা ছড়ান! 🕊️💚
© Fahad Ahammed