16/06/2025
মুরগির গাউট রোগ: কারণ, প্রতিকার ও প্রতিরোধ
#🔍 রোগের নাম: Gout
**বাংলায়: গাউট
**রোগের ধরন: মেটাবলিক (ইউরিক অ্যাসিড জমা হয়ে সমস্যা সৃষ্টি করে)
**আক্রান্ত অঙ্গ: কিডনি, জয়েন্ট, অন্তঃঅঙ্গ
📌 গাউট রোগ কী?
গাউট একটি মেটাবলিক রোগ, যেখানে মুরগির শরীরে ইউরিক অ্যাসিড সঠিকভাবে নিষ্কাশন না হয়ে শরীরের বিভিন্ন অংশে জমা হয়ে যায়। এতে জয়েন্ট, কিডনি এবং অন্যান্য অভ্যন্তরীণ অঙ্গে সাদা রঙের ইউরেট জমে গিয়ে পাখির চলাচল, বৃদ্ধি এবং স্বাস্থ্য নষ্ট হয়ে যায়।
🔍 গাউটের ধরণ
গাউট দুই ধরনের হতে পারে:
1. ভিসেরাল গাউট (Visceral Gout):
* ইউরিক অ্যাসিড শরীরের অভ্যন্তরীণ অঙ্গ (লিভার, হার্ট, কিডনি ইত্যাদি)-তে জমে।
* সাধারণত বাচ্চা মুরগি বা বয়লার বেশি আক্রান্ত হয়।
2. আর্টিকুলার গাউট (Articular Gout):
* ইউরিক অ্যাসিড জয়েন্টে জমা হয় (পা, আঙুলের সংযোগস্থলে)।
* সাধারণত প্রাপ্তবয়স্ক ব্রয়লার ও লেয়ার জাতের মুরগি আক্রান্ত হয়।
# # # 🧪 গাউটের কারণ
* ❌ অপর্যাপ্ত পানি: কম পানি খেলে কিডনি ইউরিক অ্যাসিড ফিল্টার করতে পারে না।
* ❌ উচ্চ প্রোটিনযুক্ত খাবার: প্রোটিন ভেঙে ইউরিক অ্যাসিড তৈরি হয়। অতিরিক্ত হলে কিডনির ওপর চাপ পড়ে।
* ❌ নিয়মিত কিডনি ড্যামেজ (NEPHROTOXICITY):
* মাইকোটক্সিন (অ্যাফ্লাটক্সিন)
* সালফা গ্রুপের অ্যান্টিবায়োটিক
* ইচ্ছে মতো ওষুধ প্রয়োগ
* ❌ ভিটামিন A ঘাটতি: ইউরিক অ্যাসিড নিষ্কাশনে সমস্যা হয়।
* ❌ ইনফেকশন: নিউক্যাসেল, IB, E. coli ইত্যাদি ভাইরাস/ব্যাকটেরিয়া কিডনি আক্রান্ত করতে পারে।
* ❌ দুষিত পানি বা বিষাক্ত মিনারেল: যেমন অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম, সোডিয়াম, লবণ
💊 করণীয়:
গাউট সম্পূর্ণভাবে নিরাময়যোগ্য নয়, তবে দ্রুত ভেটেরিনারি ডাক্তারের পরামর্শক্রমে ব্যবস্থা নিয়ে মৃত্যুহার কমানো সম্ভব।
1. ইউরিক অ্যাসিড কমানোর জন্য:
* Allopurinol (দ্বিতীয় লাইনের ওষুধ – ভেট ডাক্তারের পরামর্শে)
* ইউরিক অ্যাসিড নির্গমন বাড়ানোর জন্য মূত্রবর্ধক (Diuretics):
* পটাশিয়াম ক্লোরাইড (KCl)
* অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইড (NH₄Cl)
2. কিডনি ও লিভারের সাপোর্ট:
*Liv Pro ( NexCare Pharma) - কিডনি ও লিভারের সুরক্ষা দেয়।
3. পানি:
* পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানি নিশ্চিত করুন
* পানিতে মাইল্ড এসিডিফায়ার ব্যবহার করা যেতে পারে যেমন: Uni-pH ( নেক্সকেয়ার ফার্মা)
4. ফিড সংশোধন:
* অতিরিক্ত প্রোটিন ও মিনারেল (Ca, P, NaCl) কমিয়ে আনুন
* মাইকোটক্সিন বাইন্ডার ব্যবহার করুন
---
# # # 🛑 প্রতিরোধ ব্যবস্থা
✅ ১. ফিড ফর্মুলেশন ঠিক রাখা:
* বয়স অনুযায়ী সুষম প্রোটিন
* ফিডে ক্যালসিয়াম, ফসফরাসের সঠিক অনুপাত রাখা
✅ ২. পানি বিশুদ্ধ ও পর্যাপ্ত রাখা:
* প্রতিদিন পর্যাপ্ত ফ্রেশ বিরুদ্ধ পানি
* গরমকালে দিনে ৩-৫ বার পানি পরিবর্তন
✅ ৩. অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারে সতর্কতা:
* সালফা গ্রুপ (Sulphadiazine, Sulfamethazine) কম ব্যবহার
* ভেটেরিনারির পরামর্শ ছাড়া ওষুধ ব্যবহার নয়
✅ ৪. ভিটামিন সাপোর্ট:
* নিয়মিত ভিটামিন A, D3, E, B-complex
✅ ৫. বায়োসিকিউরিটি ও রোগ নিয়ন্ত্রণ:
* নিউক্যাসেল, IB, E. coli নিয়ন্ত্রণে টিকা ও সচেতনতা
🐔 খামারির করণীয়:
* প্রতিদিন পানি ও ফিড পর্যবেক্ষণ করুন
* জয়েন্ট ফোলা বা হঠাৎ মৃত্যু হলে তাৎক্ষণিক চিকিৎসকের পরামর্শ নিন
* খাদ্যে ভিটামিন A ও কিডনি ও লিভার সাপোর্ট টনিক (Liv Pro - লিভ প্রো) ব্যবহার করুন
* প্রয়োজনে ভেটেরিনারি ডাক্তার বা পরিপুষ্টিবিদ (nutritionist)-এর পরামর্শ নিন।
খামারি সচেতনতায়ঃ নেক্সকেয়ার ফার্মা (NexCare Pharma)